গোলাপ ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিভিন্ন জাতের নাম
গোলাপ ফুল খাওয়ার উপকারিতা প্রিয় পাঠক গোলাপ ফুলের উপকারিতা ও উপকারিতা এবং বিভিন্ন জাতের নাম আপনাদের অনেকের কাছেই অজানা তাই আপনারা এসব বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন এবং অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন কোথাও এর সমাধান পাচ্ছেন না। আশা করি এই আর্টিকেলটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনাদের সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবেন।
নিচে আর্টিকেলে আমরা গোলাপ ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিভিন্ন জাতের নাম, গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্য, ত্বকের যত্নে গোলাপ ফুলের ব্যবহার এবং আরো অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
ভূমিকাঃ
ফুলের রানী হিসেবে পরিচিত গোলাপ। গোলাপ ফুল পছন্দ করো না এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। এজন্য গোলাপকে ভালোবাসা ও সৌন্দর্যের প্রতীক বলা হয়।পৃথিবীতে বিভিন্ন রঙের গোলাপ রয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন রঙের গোলাপ ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করে। ত্বকের যত্নের পাশাপাশি খাদ্য হিসেবে গোলাপ ফুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
ইদানিং গোলাপ ফুলের চা খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া গোলাপ ফুল দিয়ে অনেক রোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে। ত্বকের যত্নে গোলাপ ফুলের ফেসপ্যাক খুবই কার্যকরী । এটি ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। তাই গোলাপ ফুলের গুনাগুন পুরোপুরি জানতে হলে গোলাপ ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং বিভিন্ন জাতের নাম,ত্বকের যত্নে গোলাপ ফুলের ব্যবহার ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে।
গোলাপ ফুলের বর্ণনাঃ
গোলাপ এক প্রকার সুপরিচিত ফুল যা আধুনিক মানুষের কাছে সৌন্দর্যের ও ভালবাসার প্রতি হিসেবে সমাদৃত। গোলাপকে বলা হয় ফুলের রানী।Rosaceae পরিবারের Rosa গণের এক প্রকারের গুল্ম জাতীয় গাছে গোলাপ ফুল ফুটে থাকে। পৃথিবীতে প্রায় ১০০ প্রজাতির বিভিন্ন রঙের গোলাপ ফুল রয়েছে।
গোলাপের পাপড়ি গড়ন ও বিন্যাসে এক রূপ নান্দনিকতা রয়েছে, যা মানুষকে আকৃষ্ট করে। সুগন্ধি গোলাপের ঘ্রাণও মানুষের প্রিয়। তবে গোলাপের নিজস্ব কোন গন্ধ নেই। গন্ধ উৎপাদনের কোন ক্ষমতা নেই। গোলাপি বর্ণ ছাড়াও নানা বর্ণের গোলাপ জন্মে থাকে। যেমন-লাল, হলুদ, সাদা, গোলাপি, সবুজ ইত্যাদি। ইতোমধ্য ''গার্ডেন রোজ'' নামে বিভিন্ন হাইব্রিড গোলাপের উৎপাদনও করা হচ্ছে।
গোলাপের আদি নিবাস এশিয়া মহাদেশে। অল্প কিছু প্রজাতির আদি বাস ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা ও উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা মহাদেশে। ফুলের সৌন্দর্য ও সুবাসের জন্য গোলাপ বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। গ্রীক উপকথায় আছে প্রেমের দেবী ভেনাস এর পায়ের রক্ত থেকে গোলাপের জন্য।
আরব দেশীয় কাহিনীতে আছে সাদা গোলাপকে বুলবুলি পাখি আলিঙ্গন করায় বুলবুলি পাখি গোলাপের কাটায় আহত হয়ে বুলবুলি পাখির রক্ত থেকে সাদা গোলাপ থেকে লাল গোলাপের জন্ম হয়।
গোলাপ ফুলের বৈশিষ্ট্যঃগোলাপ বা গোলাপ গুল্ম হিসেবে পরিচিত গাছগুলি রোজা বংশের সাধারণত কাঁটাযুক্ত সব জায়গায় একটি সিরিজ। গোলাপের বৈশিষ্ট্য গুলো হলোঃ
- গোলাপ হলো Rosaceae পরিবারের Rosa গণের একপ্রকার উদ্ভিদ। এই পরিবারে অন্য সদস্যদের মধ্যে চেরি, পিচ, আপেল এবং এপ্রিকট অন্তর্ভুক্ত।
- গোলাপ গুলি সাধারণত গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ, তবে কিছু প্রজাতি গাছ হিসেবে বৃদ্ধি পায়।
- গোলাপের ডালপালা গুলি প্রায়শই তীক্ষ্ণ কাটা দিয়ে সজ্জিত থাকে। এই কাটা গুলি জন্তু এবং কীটপতঙ্গ হাত থেকে ফুল ও ফুলের গাছকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
- গোলাপ ফুলগুলি সাধারণত বড় এবং শোভাকর হয়। ফুলের আকার এবং আকৃতি প্রজাতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়।
- গোলাপ ফুলের রঙগুলিও প্রজাতির উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। গোলাপ ফুল সাদা, লাল, গোলাপি, হলুদ, কমলা, বেগুনি এবং অন্যান্য রঙের হতে পারে।
- গোলাপ ফুলগুলি সাধারণত বসন্ত বা গ্রীষ্মকালে ফোটে। তবে কিছু প্রজাতি শরৎ বা শীত কালেও ফোটে।
গোলাপ ফুলের বিভিন্ন জাতের নামঃ
আমরা প্রতিদিনই আমাদের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের ফুল দেখতে পাই। ফুল তার রূপ গন্ধ ও সৌন্দর্য দিয়ে আমাদেরকে আনন্দিত করে। গোলাপ ফুল ও তার মধ্যে একটি। পৃথিবীতে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ প্রজাতির গোলাপ ফুল রয়েছে। এই সমস্ত প্রজাতির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন উপ-প্রজাতি।
সব মিলিয়ে প্রায় ৫৫০টি আলাদা আলাদা গোলাপের অস্তিত্বে রয়েছে পৃথিবী জুড়ে।বিভিন্ন জাতের গোলাপ ফুল রয়েছে, এদের মধ্যে কয়েকটি বিদেশি জাতের গোলাপ হল-রানী এলিজাবেথ, ব্লাক প্রিন্স, ইরান, মিরিন্ডা পাপা মিলা, আইসবার্গ, রোজ গুজার্ড, বেঙ্গলি, কুইন এলিজাবেথ, জুলিয়াস রোজ, ডাচ গোল্ড, সানসিল্ক,কিংস যানসন, হাজারী গোলাপ উল্লেখযোগ্য।
কয়েক জাতের বাংলাদেশী গোলাপ হলো- ফাতেমা সাত্তার, মল্লিক, রাহেলা, হামিদ, পিয়ারী, ভাসানী, শের- এ -বাংলা,১৯৫২, জয়ন্তী, শিবলী উল্লেখযোগ্য
কোন গোলাপের কি মানেঃবিভিন্ন রঙের গোলাপের রয়েছে বিভিন্ন অর্থ। জেনে নিন কোন গোলাপ কিসের প্রতীক-
সাদা গোলাপঃ শান্তি, একতা এবং শুদ্ধতার প্রতীক সাদা গোলাপ। নতুন প্রেম করেছেন বা শুরু করতে চাচ্ছেন? তাহলে ভালোবাসার মানুষকে উপহার দিন একগুচ্ছ সাদা গোলাপ। বেশিরভাগ বিয়েতে এ কারণে সাদা গোলাপ ব্যবহার করা হয়।
হলুদ গোলাপঃ চেনা বন্ধুত্ব আরও এগিয়ে নিতে চান, তাহলে বন্ধুকে বলুন সব সময়ের জন্য তোর পাশে আছি। আসলে বন্ধুত্বের প্রতীক হলো হলুদ গোলাপ।
লাল গোলাপঃ গোলাপের নাম নিলেই প্রথমে যে রঙের গোলাপ আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেটি হল লাল গোলাপ। লাল রংয়ের গোলাপ হৃদয়ের প্রতীক। তাই কাউকে ভালোবাসা জানাতে চাইলে তাকে উপহার দিন লাল গোলাপ।
গোলাপি গোলাপঃ কারও প্রশংসা করতে চাইলে এই দিনে তাকে দিতে পারেন গোলাপি রঙের গোলাপ। এটি প্রশংসা ও মুগ্ধতার প্রতি প্রতীক।
ল্যাভেন্ডার গোলাপঃ এই রঙের গোলাপ সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু এটি প্রেমের মুখ্যমস্ত মোক্ষম অস্ত্র কারণ কাউকে এ গোলাপ দেওয়ার মানে হল আপনি তার প্রথম দেখাতেই প্রেমে পড়ে গেছেন।
কমলা গোলাপঃ তীব্র আবেগ ও আকুতি বোঝানোর জন্য লাল গোলাপের চেয়ে কমলা গোলাপ বেশি কার্যকরী। তাই কাউকে আপনি মুখে কিছু বলতে না পারলে কমলা রঙের গোলাপের সাহায্য নিতে পারেন।
পিচ গোলাপঃ এই রঙের গোলাপ আরোগ্যর প্রতীক। সততা, আন্তরিকতা, সহমর্মিতা বোঝাতে উপহার দিন পিস গোলাপ।
নীল গোলাপঃ প্রকৃতিতে নীল গোলাপের অস্তিত্ব নেই। এ কারণে নীল গোলাপ রহস্য ও অসম্ভবের প্রতিনিধিত্ব করে। আপনি যদি কাউকে জানাতে চান যে তারা অনন্য, তাহলে একগুচ্ছ নীল গোলাপ হতে পারে দারুন উপহার।
কালো গোলাপঃ কালো গোলাপের অর্থ সবচেয়ে জটিল। কল্পকাহিনীতে এ গোলাপের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়। রহস্য, মৃত্যু, শোক-কালো গোলাপ এসব কিছুরই প্রতীক।
ত্বকের যত্নে গোলাপ ফুলের ব্যবহারঃ
ফুল মানে সুন্দর। আর গোলাপকে বলা হয় ফুলের রানী। সৌন্দর্যের উপমা দিতে বরাবরই ব্যবহার করা হয় গোলাপ ফুলের নাম একগুচ্ছ গোলাপ দিয়ে শুরু হতে পারে একটা সুন্দর সম্পর্কের এই ফুলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অনেক আবেগ, অনেক ভালোবাসা।
মিষ্টি গন্ধের এই ফুল যে কোন নারীর সাজকে অনন্য করে তোলে। এর আরেকটি ভাল দিক হলো, গোলাপের পাপড়ি আপনি ব্যবহার করতে পারবেন রূপচর্চার কাজেও। জেনে নিন ত্বকের যত্নে কিভাবে গোলাপের পাপড়ি ব্যবহার করবেন।
কোমল ত্বক পেতেঃ ত্বক কোমল করতে গোলাপের পাপড়ি বেশ কার্যকরী। দুই কাপ পানিতে একটি তাজা গোলাপ ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে উঠে সেই গোলাপ ভিজিয়ে রাখা পানিতে মুখ ধুয়ে নিবেন। এটি ছাড়াও আরেক উপায়ে ত্বক কোমল করতে পারবেন।
গোলাপের শুকনা পাপড়ি, ও দুধ মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রনের জায়গায় লাগিয়ে নিন। সকালে উঠে ধুয়ে নেবেন। এতে ব্রণ দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকও হবে কোমল।
ক্লিনজার হিসেবে ব্যবহারঃ গোলাপের নিজস্ব একটি মিষ্টি গন্ধ রয়েছে। এটি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক পরিষ্কার করতে পারে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকে থাকা জীবাণু ধ্বংস করতে পারে। ন্যাচারাল ক্লিনজার তৈরি করার জন্য শুকনা গোলাপের পাপড়ি গুড়া করে নিতে হবে।
তারপর এক টেবিল চামচ পাপড়িগুড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে ক্লিনজার তৈরি করে নিতে হবে। আপনি যদি গোলাপের পাপড়ির মাস্ক তৈরি করতে চান,তবে শুকনা গোলাপের পাপড়ি গুড়া করে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে নিন। মুখে মেখে অপেক্ষা করুন ১৫ মিনিট। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
টোনার হিসেবে ব্যবহারঃ যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের জন্য টোনার হিসেবে কাজ করতে পারে গোলাপের পাপড়ি।১কাপ পানি ফুটিয়ে নিন এবার তার মধ্যে এক মুঠো গোলাপের পাপড়ি দিয়ে পাত্রটি ঢেকে দিন ।এভাবে ঢেকে আধা ঘন্টা রেখে দিন।
মিশ্রণটি ঠান্ডা হয়ে গেলে তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা রোজ এসেন্সিয়াল অয়েল দিন। এবার মিশনটি একটি পরিষ্কার স্প্রে বোতলে ভরে রাখুন। মুখ পরিষ্কার করার পর এই মিশ্রণ টোনার হিসেবে মুখে স্প্রে করে নিবেন।
প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজারঃ স্পর্শকাতর ও শুষ্ক ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাই হিসেবে দারুণ কাজ করে গোলাপের পাপড়ি। এতে থাকা ন্যাচারাল অয়েল স্কিন সেল এর মধ্যে ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক ভেতর থেকে আর্দ্র থাকে।ময়েশ্চারাইজার তৈরি করার সময় লাগবে গোলাপ জল, মধু,শিয়া বাটার ও পছন্দমত কয়েকটি এসেন্সিয়াল অয়েল।
সবগুলো উপাদান ব্লেন্ড করে নেবেন। ব্লেন্ড করার ফলে সিল্কি স্মুথ সাদা ক্রিমের মতো তৈরি হবে। ক্রিমটুকু একটি পরিষ্কার কৌটায় ধরে রাখুন। ত্বকের দাগ-ছোপ সব দূর করতেও এই ক্রিম কার্যকরী।
সানস্ক্রিন হিসেবেঃ গোলাপের পাপড়ি প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে উপকারী। বাইরের রোদে বের হওয়ার আগে গোলাপের পাপড়ি রস, গ্লিসারিন ও শসার রস মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি ব্যবহার করে ত্বক রোদে পোড়ার হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা পাবে।
চোখের নিচের কালচে ভাব দূর করেঃগোলাপের পাপড়ি চোখের নিচের কালচে ভাব দূর করে দেয়। গোলাপের পাপড়ি পানি দিয়ে সেদ্ধ করে রেখে দিন। এরপর সেটা ঠান্ডা করে নিন। এরপর একটি তুলো গোলাপের জলে ভিজিয় বন্ধ করা চোখের ওপর দিয়ে ১৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে রাখুন। এভাবে প্রতিদিন ব্যবহার করলে চোখের নিচের কালচে ভাব দূর হয়ে যাবে।
কনুইয়ের দাগ দূর করতেঃ কনুইয়ে দাগ থাকলে গোলাপ পেস্ট, অলিভ অয়েল, মধু ও লেবুর রসের মিশ্রণ সেই দাগের অংশে লাগিয়ে নিন। ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর চিনি দিয়ে স্ক্রাব করুন ৫ মিনিট ধরে। মোটামুটি ১৫ মিনিট লাগবে। সপ্তাহে দুই দিন এ মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
গোলাপ ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতাঃ
গোলাপ শুধু সৌন্দর্যের দিক দিয়ে সেরা। তেমনি গোলাপের রয়েছে অনেক উপকারিতা। গোলাপের মধ্যে প্রচুর ঔষধি গুনাগুন রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও কোন কোন ক্ষেত্রে এর অপকারিতাও রয়েছে। নিম্নে গোলাপের উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো আলোচনা করা হলো।
উপকারিতাঃ
কোমল ত্বক পেতেঃ ত্বক কোমল করতে গোলাপের পাপড়ি বেশ কার্যকরী। দুই কাপ পানিতে একটি তাজা গোলাপ ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে উঠে সেই গোলাপ ভিজিয়ে রাখা পানিতে মুখ ধুয়ে নিবেন। এটি ছাড়াও আরেক উপায়ে ত্বক কোমল করতে পারবেন।
গোলাপের শুকনা পাপড়ি, ও দুধ মিশিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করে নিন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ব্রনের জায়গায় লাগিয়ে নিন। সকালে উঠে ধুয়ে নেবেন। এতে ব্রণ দূর হওয়ার পাশাপাশি ত্বকও হবে কোমল।
গলা ব্যথাঃ তুষার তৈরি করে গোলাপ ফুল দিয়ে গার্গাল করলে মুখের ফোলাভাব, নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ এবং গলা ব্যথার চিকিৎসা সাহায্য করে। এছাড়া গোলাপ পাতা চিবিয়ে খেলে মুখ ও ঠোঁটের ফোলা ভাব কমে যায়।
মাথায় ফোড়া নিরাময়েঃ গোলাপ পাতা পিষে লাগালে মাথার ক্ষত, চক্ষু রোগ বা ছানি, দাঁতের রোগ এবং অশ্ব বা পাইলস রোগে উপকার পাওয়া যায়।
চোখের পাতার প্রদাহ থেকে মুক্তি পেতেঃ গোলাপ ফুল পিষে লাগালে চোখের পাতার ফোলাভাব কমে যায়। এটি দাঁতে মালিশ করলে দাঁতের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া ২-২ ফোঁটা গোলাপের নির্যাস চোখে লাগালে চোখের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
যক্ষা নিরাময়েঃ ফুসফুসের রোগ টিবি নিরাময়ে এই রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধে গোলাপ ফুল ব্যবহৃত হয়।
পেটের রোগেঃ গোলাপ ফুলের গুঁড়া ২-৪ গ্রাম মধুর সাথে খেলে কষ্ট কাটে না ফোলাভাব এবং ডায়রিয়ায় উপকার পাওয়া যায়।
লিভারের রোগেঃ রক্তের ব্যাধি এবং লিভার সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসায় লাল গোলাপ ফুল ব্যবহার করা হয়।
কুষ্ঠ রোগেরঃ সাদা রঙের গোলাপ ফুল কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। সাদা গোলাপ ফুলের গুড়া লাগালে কুষ্ঠ ও অন্যান্য পিত্তজ ব্যাধি নাশ হয়।
জ্বরেঃ জ্বর নামতে না থাকলে গোলাপের তৈর গুলকন্দ খেলে পিত্তজ্বরে উপকার পাওয়া যায়।
গোলাপ ফুলের চাঃ গোলাপ ফুলের পাপড়ি গরম পানিতে সেদ্ধ করে চা তৈরি করা যায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ চায়ের গুড়ার সাথে শুকনো পাপড়ি যোগে চা বানানো যায়।
অপকারিতাঃ
অ্যালার্জিঃ গোলাপ ফুলের পরাগ ও সুগন্ধে কিছু লোকের অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চোখ ও নাক চুলকানি। হাঁচি। কাশি। শ্বাসকষ্ট ও ত্বকে ফুসকুড়ি।
ত্বকের সমস্যাঃ গোলাপ ফুলের তেল ও নির্যাস ত্বকের জন্য কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতিকর হতে পারে। এগুলি ত্বকে অ্যালার্জি চুলকানি ফুসকুড়ি ও জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে।
চোখের সমস্যাঃ গোলাপ ফুলের পাপড়ি বা তেল চোখে গেলে চোখ জ্বালা করতে পারে। এছাড়াও গোলাপ ফুলের সুগন্ধ চোখের জালা ও পানি পড়ার কারণ হতে পারে।
খাদ্যে অ্যালার্জিঃ গোলাপ ফুলের নির্যাস বা তেল যুক্ত খাবার খেলে কিছু লোকের অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, বমি, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট।
শেষ কথাঃ
সৌন্দর্য ও ঘ্রাণের দিক দিয়ে গোলাপ অতুলনীয়। আমাদের দৈনন্দিন জিবনে গোলাপ ফুল গুরুক্তপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।গোলাপের ফেসপ্যাক ব্যবহারের ফলে ত্বক উজ্জ্বল সুন্দর হয়।তাছাড়া গোলাপের পাপড়ির গুড়া বিভিন্ন ধরণের অসুখ সারাতে সাহায্য করে। গোলাপ ফুলের পাপড়ির গুড়া দিয়ে তৈরি চা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারি।
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গোলাপের প্রচুর ব্যবহার রয়েছে। গোলাপের অনেক উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার অপকারিতাও আছে। অনেকের গোলাপের সংস্পর্শে আসলে অ্যালার্জির সমস্যা সৃষ্টি হয়। তাই তাদেরকে গোলাপের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিত।
তাই এ আর্টিকেলে আমরা গোলাপ ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা,ত্বকের যত্নে গোলাপ ফুলের ব্যবহার ও অন্যান্য পোস্ট নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার পরিচিত বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url