অনলাইন থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায় বিস্তারিত জানুন
নিচে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা অনলাইনে ইনকাম কি? কিভাবে অনলাইন ইনকাম করা
যায় এবং অনলাইনে ইনকামের অনেকগুলো সাইট নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
ভূমিকাঃ
বর্তমান বিশ্বে অনেক মানুষ অনলাইন ইনকামের প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। আসলে অনলাইন
ইনকাম হচ্ছে ইন্টারনেটে কাজে লাগিয়ে নিজের মেধা দিয়ে ইনকাম করা। অনেক গৃহিনী
ও এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে ইনকাম করে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলছে।
বাংলাদেশে অনলাইন ইনকামের অনেকগুলো সাইট রয়েছে যেমন-যেমন আপ ওয়ার্ক সাইট,
ফ্রিল্যান্সার সাইট, ফাইবার সাইট, ইউটিউব সাইট ইত্যাদি। এসব সাইডের সাহায্যে
মানুষ ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজে ইনকাম করতে
পারে। তবে অনলাইন ইনকাম নিয়ে অনেকের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে।
অনলাইন ইনকামের মূল মন্ত্র হচ্ছে ধৈর্য, পরিশ্রমএবং সাধনা। যাদের মধ্যে এসব
গুণাগুণ থাকবে একমাত্র তারাই অনলাইন ইনকাম করে কৃতকার্য হতে পারবে। সেই সাথে
অনলাইন ইনকাম কি? অনলাইন থেকে কিভাবে ইনকাম করা যায় এগুলো নিয়ে পরিপূর্ণ
ধারণা থাকতে হবে।
অনলাইন ইনকাম কি?
অনলাইন ইনকাম বলতে ইন্টারনেটকে কাজে লাগিয়ে নিজের মেধা দিয়ে ইনকাম করাকে
বুঝায়। সহজভাবে বলতে গেলে আপনার স্কিলকে অনলাইনে বিভিন্ন বায়ারের কাছে
বিক্রি করে বা কনটেন্ট তৈরি করে ইনকাম করতে পারেন। আমরা আউটসোর্সিং বা
ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অনেক শুনেছি বা জেনেছি। অনলাইন ইনকাম নিয়ে অনেক অনেক
মিথ্যা প্রচারিত আছে।
এদের মধ্যে বেশিরভাগ মিথ্যাই বানোয়াট। সমাজের কিছু স্বার্থবাদী মানুষ কখনো
চায় না অন্য কেউ সফল হোক। যদিও অনলাইন ইনকাম সহজ কোন বিষয় নয়, তবুও ধৈর্য,
মেধা, সময় এবং ইচ্ছা শক্তি থাকলে খুব সহজে অনলাইন ইনকাম করা সম্ভব।
অনলাইন ইনকাম সাইডঃ
জীবনে বেঁচে থাকার জন্য প্রতিটি মানুষেরই টাকার প্রয়োজন। আরে টাকায় মানুষকে
খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। দৈনন্দিন কাছে টাকা একটা অত্যন্ত
প্রয়োজনীয় উপাদান। প্রতিটি মানুষ হয়েছে টাকা ইনকাম করতে। তাই সকলের পক্ষে
চাকরি করা বা ভালো লেখাপড়া করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা।
আর বাংলাদেশে এরকমই হয়ে আসছে। বাংলাদেশ প্রায় ৮৬ লক্ষ ৭৭ হাজার লোক বেকার
রয়েছে। আর এই বেকারত্ব দূর করার জন্য বাংলাদেশের কিছু অনলাইন ইনকাম সাইট
রয়েছে। আজকে এই আর্টিকেলে আমরা বাংলাদেশ কিছু অনলাইন সাইট নিয়ে আলোচনা করব।
ইউটিউব সাইটঃ
বর্তমানে ইনকামের শীর্ষে রয়েছে যে সাইটগুলো তার মধ্যে যারা ছিল অন্যতম।
বিনোদনের সাইট হিসেবেও এই সাইট ব্যবহার হয়। এই সাইডে টাকা ইনকাম করতে হলে
আমাদেরকে ভিডিও প্রথমে আমাদেরকে ভিডিও বানাতে হবে এবং সেই ভিডিও এই
ওয়েবসাইটে আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায়।
এই সাইডে ইনকাম করা অনেক সময়ের কাজ তাই যে কেউ এই সাইটে ইনকাম করতে পারেনা।
ইনকাম করতে অনেক সময় লাগে। কারণ এর জন্য কিছু সত্য প্রযোজ্য রয়েছে। যেমন,
প্রথমে ১০০ সাবস্ক্রাইব হতে হবে এবং ৩০০ ঘন্টা ভিডিও ভিউ করতে হবে।
এতে আপনি এখান থেকে নমিনেশন পাবেন এবং এর পরে আপনি আপনার ভিডিও এর জন্য
ইউটিউব থেকে টাকা পাবেন লাইক, কমেন্ট এবং ভিডিও দেখার সময় অনুসারে। এসব
ছাড়া Google Ads আপনার ভিডিওতে লাগালে আপনি সহজে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তাছাড়া কোন কিছু নিয়ে রিভিউ করলে সেখান থেকে টাকা আয় করা সম্ভব। এককথায়
বলা যায় যে, ইনকাম এর জন্য এটি একটি অন্যতম সাইট। দোকান মার্কেট সহ বিভিন্ন
প্রোডাক্ট এর ভিডিও বানালে টাকা আয় করা যায়। অনলাইনে ইনকামের জন্য প্রায়
সকলে এই সাইট ব্যবহার করে।
ভিডিও গেম সকলেই পছন্দ করে আর এই ভিডিও গেমের ভিডিও, লাইভ স্ট্রিম, নাটক।
পড়াশুনা ও খেলাধুলা সহ প্রায় সকল কিছু আধার হলো এই সাইট। আপনারাও যদি ধৈর্য
সহকারে এই সাইডে কাজ করতে পারেন তাহলে আপনারা ইনকাম করতে পারবেন।
দারাজ সাইটঃদারাজ সাইটে দোকান খুলে ইনকাম
করা যায় খুবই সহজে। আপনার যদি কোন প্রোডাক্ট থাকে তাহলে সেই প্রোডাক্ট
বিক্রির জন্য আপনি এই সেট ব্যবহার করতে পারেন। তবে বর্তমানে এটি অ্যাপ রুপেও
পাওয়া যায় যা গুগল Playstor এ পাওয়া যাবে।
এই সাইডে প্রথমে আপনাকে লগইন করতে হবে এবং তারপর আপনার দোকান খুলে এই সাইট
থেকে ইনকাম করতে পারবেন। এখানে আপনার প্রোডাক্ট এর দাম ও গুনাগুন গুলো দিতে
হবে এরপর আপনার প্রোডাক্ট গুলি আপনি সহজে বিক্রি করতে পারবেন এই সাইডে।
এটি একটি সেলার সাইট, এই সাইডের মাধ্যমে আপনি আপনার প্রোডাক্ট বিক্রি করতে
পারবেন খুব সহজেই। এ সাইটটি এখন বাংলাদেশী সাইটের মাঝে একটি জনপ্রিয় সাইট।
আপওয়ার্ক সাইটঃআপওয়ার্ক ফ্রিল্যান্সিং
এর জন্য অনেক ভালো একটি ওয়েবসাইট। এখানে বিভিন্ন ক্লাইন্ট তাদের কাজ পোস্ট
করে। এরপর আপনি যদি সে কাজ পারেন এবং নার্স আপনার যদি পারিশ্রমিক পছন্দ হয়
তাহলে আপনি কাজের প্রস্তাব দিতে পারবেন আর আপনি যদি সিলেক্টেড হন কাজ করে
দেওয়ার জন্য তাহলে আপনি কাজ করে দিলে টাকা চলে আসবে ওয়ালেটে।
এরপর সেখান থেকে টাকা আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টে ট্রান্সফার করতে পারবেন।
এখানে অল্প সময় দেওয়ার মাধ্যমে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যেহেতু আপনি
অনেক বিদেশী ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করবেন তাই আপনার পেমেন্ট বেশি পাওয়া
সম্ভাবনা থাকবে।
আমাজনঃআমাজন আমেরিকার একটি মাল্টিন্যাশনাল
কোম্পানি। এটি ই-কমার্স এর একটি অন্যতম প্লাটফর্ম। আপনি এখান থেকে
বিভিন্নভাবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কিন্তু এজন্য আপনাকে দক্ষ হতে হবে।
এখানে আপনি আপনার নিজের পণ্য বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবেন।
বিভিন্ন পন্যের হোলসেল দিতে পারবেন। আপনার নিজের লেখা বইও এখানে প্রকাশ করতে
পারবেন। এছাড়াও আরো অনেক কাজের মাধ্যমে আমাজন থেকে টাকা ইনকাম করা যায়।
ফাইবার ডটকম সাইটঃফাইবার ডট কম আরেকটি
অনেক জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সার সাইট যেখানে আপনার প্রচুর ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ
পাবেন। আপনারা এখানে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আপনারা নিজের Skill এবং
Knowledge এর সাথে জড়িয়ে কাজগুলো খুঁজুন এবং সঠিকভাবে কাজগুলো করে দেওয়ার
বিপরীতে আপনি অবশ্যই টাকা আয় করতে পারবেন। Logo, design,Web designing,Video
editing,SEO,Content writing,Digital marketing,Programming ইত্যাদি বিভিন্ন
বিষয়ে সাথে জড়িত কাজ এখানে পাবেন।
ফেসবুক ডটকম সাইটঃফেসবুক হলো একটি
জনপ্রিয় অনলাইনস সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট। এখানে যদি আপনার একটি
অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে এখান থেকে ও আপনি ভালো পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে
পারবেন। ফেসবুক মার্কেটপ্লেস এ্রর মধ্যে নিচের পণ্য প্রচার করে বিক্রি করে
ইনকাম করতে পারবেন।
facebook in -stream ads এর সাহায্যে নিজের ফেসবুক চ্যানেলে আপলোড করা
ভিডিওগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ইনকাম করতে পারবেন। যদি আপনার ফেসবুক পেজ বা
প্রোফাইলে প্রচুর ফলোয়ার্স রয়েছে তাহলে আপনি এফিলেট মার্কেটিং করে ইনকাম
করতে পারবেন।
ফ্রি অনলাইন ইনকামঃবর্তমান সময়ে ফ্রি
টাকা ইনকাম করার জন্য অনেক ধরনের উপায় রয়েছে যেগুলো আপনারা সহজে নিজের ঘরে
বসে বসে থেকে করতে পারবেন এ বিষয়গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করব। অনলাইনের
মাধ্যমে এমন অনেক ধরনের কাজ রয়েছে যেগুলো করে আমরা ফ্রিতে টাকা ইনকাম করতে
পারি। সেই কাজগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-
ক্যাপচা এন্ট্রি করে আয়ঃআপনি যদি অনলাইনে
মাধ্যমে ফ্রিতে ইনকাম করতে চান তাহলে প্রতিদিন কম করে হলেও ৫০০ টাকা ইনকাম
করতে পারবেন শুধুমাত্র অনলাইনের মাধ্যমে একটি একাউন্ট তৈরি করে সেখানে
ক্যাপচা এন্ট্রি করে। আপনি যদি একজন অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারী হয়ে
থাকেন তাহলে আপনারা সহজে অনলাইনের মাধ্যমে ক্যাপচা এন্ট্রি করে প্রতিদিন ৫০০
টাকায় করতে পারবেন।
ক্যাপচা এন্ট্রি করে আয় করার জন্য আপনাকে অবশ্যই টাইপিং এর দক্ষ হতে হবে
কারণ ক্যাপচা এন্ট্রি করার জন্য টাইপিং স্পিড ছাড়া কখনো সম্ভব না তাই আপনি
যদি টাইপিং স্পিড মাস্টার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সহজে ক্যাপসিং করে প্রচুর
পরিমাণে টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন নিজের ঘরে বসেই।
ব্লগিং করে আয়ঃবর্তমান সময়ে অনলাইনে
ফ্রিতে টাকা আয় করার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হচ্ছে ব্লগিং। বর্তমান বর্তমানে
আমার জানামতে হাজার হাজার মানুষ ব্লগিং করে নিজের ঘরে বসে টাকা ইনকাম করে
যাচ্ছে। আপনি যদি সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্লগিং শুরু করতে পারেন তাহলে
আপনিও প্রতিদিন কম করে হলে ৫০০ টাকা আয় করতে পারবেন।
আপনার নিজের মালিকানা যদি একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট কিংবা ব্লক থাকে সেখান থেকে
আপনারা প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে টাকা ইনকাম করতে পারেন। আপনারা যদি ব্লগিং এর
সাথে জড়িত হতে চান তাহলে আপনারা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্লগিং টাকা ইনকাম করতে
পারবেন।
গুগল এডসেন্স থেকে আয়ঃঅনলাইন থেকে
ইনকামের আরেকটি নিশ্চিত উপায় হল গুগল এডসেন্স থেকে আয় করা। আপনার ওয়েবসাইট
ব্লগ এ নির্ধারিত স্থানে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করা যায় গুগল এডসেন্স থেকে।
গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে।
ব্যবহারকারীরা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে আপনি গুগল এডসেন্স থেকে টাকা পাবেন। আপনি
পৃথিবীর যেকোন প্রান্তেই থাকেন না কেন নিয়মিত আপনার সাইডে ভিজিটর বানানোর
মাধ্যমে আপনার আয় বৃদ্ধি করতে পারেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়ঃঅ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল আপনার ওয়েবসাইটে অন্যের প্রোডাক্ট প্রচারের
মাধ্যমে বিক্রি করা। যার মাধ্যমে আপনি বিক্রিত প্রডাক্টের দাম থেকে নির্ধারিত
হারে কমিশন পাবেন। আপনার ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে যত বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি হবে
তত বেশি আয় হবে আপনার।
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনলাইনে আয়ঃঘরে বসে
যদি ইনকাম করতে চান তাহলে ঘরে বসে ইনকাম আরেকটি উপায় হচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইন
করে ইনকাম করা। এমনকি গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে আপনি মার্কেটপ্লেস থেকেও ইনকাম
করতে পারবেন। আর গ্রাফিক ডিজাইন থেকে ইনকাম করতে হলে আপনাকে অবশ্যই এ কাজে
দক্ষ এবং পারদর্শী হতে হবে।
তারপর মার্কেটপ্লেস এ আপনার ডিজাইন দিয়ে গিগ সাজাতে হবে। এরপর আপনার ডিজাইন
বিক্রি করে আপনি ঘরে বসে ইনকাম করতে পারবেন। বর্তমান বিশ্বের গ্রাফিক
ডিজাইনের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্রয়োজন শুধু দক্ষতা বৃদ্ধি ও কাজের সঠিক
উপস্থাপনা।
পরিশেষেঃ
আশা করি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা অনলাইন ইনকাম কি?এবং কিভাবে অনলাইন
থেকে ইনকাম করা যায় পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পেরেছেন। এই আর্টিকেলের
মাধ্যমে আমরা অনলাইনে কিভাবে অনলাইনে মাধ্যমে কিভাবে ইনকাম করা যায় এবং
অনলাইন ইনকামের সাইটগুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
যদি অনলাইন ইনকাম নিয়ে আপনাদের মধ্যে কোন মতামত থাকে তাহলে আপনারা আমাদের
সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনারা সামান্য পরিমাণ উপকৃত
হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিচিত আশেপাশে পরিচিত আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও
পাড়া-প্রতিবেশীদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।
সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url