সাওম পালনের কি কি সুফল রয়েছে বিস্তারিত জানুন
চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোজার উপকারিতাপ্রিয় পাঠক সাওম পালনে কি কি সুফল রয়েছে সে সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু জানতে চান এজন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু কথাও মনের মত সমাধান খুঁজে পাননি। এই পোস্টে আমরা সাওম পালনের সুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনি সাওম পালনের সুফল সম্পর্কে জানতে পারবেন।
নিচে আর্টিকেলে আমরা শাওন পালনের সুফল, সাওম কি এবং কেন? সাওমের ইতিহাস ছাড়াও আরো অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করছি, যেগুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।
ভূমিকাঃ
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা হল একটি। সুবহান সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, ভোগ বিলাস, স্ত্রী সঙ্গম ও অশ্লীল কথাবার্তা থেকে বিরত থাকার নামই সাওম বা রোজা। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান নর-নারীর ওপর রোজা ফরজ। মুসলমানদের জীবনে রোজার মর্যাদা অনেক বেশি।
রোজা হচ্ছে আল্লাহর নৈকট ও সান্নিধ্য লাভের উত্তম মাধ্যম। রোজা মানুষের মনের সকল অন্ধকার, পাপ, হিংসা, অহংকার দূর করে মানুষের মনকে পবিত্র করে তোলে। রোজা মানুষকে সংযমী ও ধৈর্যশীল হওয়ার শিক্ষা দেয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানদের জীবনে রোজার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই সাওম পালনের কি কি সুফল রয়েছে সে সম্পর্কে জানতে হলে রোজা কি এবং কেন? রোজার ইতিহাস ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে।
রোজা কি এবং কেনঃ
রোজার ইতিহাস:
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ এর মধ্যে একটি হলো রোজা।রমজানের এই রোজা প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলমানের উপর ফরয করেছেন শুধু আমাদের উপর নয় পূর্ববর্তী সকল নবী ও উম্মতের উপর রোজার বিধান আরোপ করেছিলেন।
এ সর্ম্পকে মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেরুপ ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা খোদাভীরু হতে পারো। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৩)
হজরত আদম(আ.)-এর রোজার ধরন কেমন ছিল তা সঠিকভাবে জানা যায়নি।ধারণা করা হয় আদাম(আ.)-সৃষ্টির পর তাকে নিষিদ্ধ ফল বর্জনের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করায় আল্লাহ তাদেরকে ভূপৃষ্ঠে পাঠিয়ে দেন। অতঃপর তারা উক্ত ভুলের জন্য অনুতপ্ত হন, তওবা করেনএবংকাফ্ফারাস্বরূপ ধারাবাহিকভাবে চল্লিশ বছর রোজা রেখেছিলেন।
রোজার গুরুত্বঃ
অন্য আয়াতে বলেন, ‘রমজান মাস, এতে মানুষের দিশারি এবং সৎ পথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা এই মাস পাবে, তারা যেন এই মাসে সাওম পালন করে।’
আরেক আয়াতে বলেন, ‘আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা থেকে উষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। এরপর নিশাগম পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো।’
(সুরা বাকারা, আয়াত::(১৮৩, ১৮৫ ও ১৮৭)।রোজার গুরুত্ব বর্ণ্না করতে গিয়ে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, পাঁচটি বস্তুর ওপর ইসলামের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে।
রোজা ভঙ্গের কারণঃ
- বিড়ি- সিগারেট বা হুকা সেবন করা।
- এমন কোন বস্তু খাওয়া যা সাধারনত খাওয়া হয় না। যেমন-কাঠ, লোহা ,কাগজ, পাথর, কয়লা ইত্যাদি।
- নিজের থুতু হাতে নিয়ে গিলে ফেললে।
- ভুলে স্ত্রী সঙ্গমের পর রোজা ভেঙ্গে গেছে মনে করে-আবার স্ত্রীর সাথে সহবাস সম্পর্ক করা।
সাওম পালনে কি কি সুফল রয়েছেঃ
দিনের নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে থাকা,যা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত।কেউ বলে রোজা, কেউবা বলে উপোস।আল্লাহর নির্দেশ মেনে পানাহার থেকে বিরত থাকার ফজিলত তো আছেই,সেই সাথে স্বাস্থ্যগত নানান সুফলও রয়েছে। সাওম পালনের সুফলগুলো হলোঃ
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ:ডায়বেটিস রোগিদের জন্য রোজা আশীর্বাদ।কারণ এতে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে আসে।রক্ত থেকে শরীরের বিভিন্ন কোষে শর্করা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া কার্যকর হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণ:ওজন নিয়ন্ত্রণে রোজা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।এতে বিপাক ক্রিয়ার গতি বাড়েএবং কমার প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত ওজন ঝরাতে ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায় হল রোজা।
রোজার মূল শিক্ষাঃ
লেখকের মন্তব্যঃ
প্রিয় বন্ধুরা, এ পোষ্টের মাধ্যমে আমরা রোজার অর্থ, রোজার ফজিলত ,শাওমের গুরুত্ব, রোজার মূল শিক্ষা, রোজা ভঙ্গের কারণ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আরো শিখেছি রোজা কিভাবে মানুষকে ধৈর্যশীল সংযমী হওয়ার শিক্ষা দেয়, রোজা মানুষের মনের অন্ধকার দূর করে মানুষকে সঠিক পথে সন্ধান দেয়।
আশা করি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা অনেক কিছু জানতে এবং শিখতে পেরেছেন আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি আপনারা আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।
সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url