OrdinaryITPostAd

চোখের সমস্যা দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

 চোখের দৃষ্টি বৃদ্ধি করার দোয়াপ্রিয় পাঠক চোখের সমস্যা নিয়ে আপনি খুব চিন্তিত। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে কথাও এর সঠিক সমাধান খুঁজে পাচ্ছেন না। চোখের সমস্যা দূর করার উপায় নিয়ে আমি এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে এই আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে আশা করি আপনি আপনার সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবেন।


নিচে আমরা কিভাবে চোখের সমস্যা দূর করা যায়, চোখের চুলকানির সমস্যা দূর করা যায় ও আরো অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি, যেগুলো আপনার অনেক উপকারে আসবে।







ভূমিকাঃ


চোখ মানুষের জীবনের একটি প্রয়োজনীয় অঙ্গ। চোখ ছাড়া মানুষের জীবন অচল। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে চলার পথে চোখের অপরিসীম। চোখ ব্যতীত আমরা একটা দিনও কল্পনা করতে পারি না। আর চোখ ভালো রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত চোখের যত্ন নেওয়া। চোখ ভালো রাখতে যেসব ভিটামিনযুক্ত খাবার প্রয়োজন।

সেগুলো হলো- জিংক, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার। এসব খাবার নিয়মিত খেলে চোখ ভালো থাকবে। এসব খাওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজন নিয়মমাফিক চোখের ব্যায়াম। আর চোখের যে কোন সমস্যায় অবহেলা না করে তৎক্ষণাৎ ডাক্তার দেখানো উচিত চোখ ভালো রাখতে হলে।

চোখের সমস্যা বোঝার উপায়ঃ

চোখ মানুষের শরীরের অতি প্রয়োজনীয় অংশ। চোখের সমস্যা কমবেশি সবার আছে। কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারেনা তাদের চোখের সমস্যা হয়েছে কিনা বা কখন ডাক্তার দেখাতে হবে। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো, কিভাবে বুঝবেন আপনার চোখের সমস্যা হয়েছে ?এমন কিছু লক্ষণ আছে যেগুলো দেখলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে আপনার চোখের সমস্যা হয়েছে। আপনাদের বুঝার জন্য নিচে কিছু চোখের সমস্যা দেওয়া হলো- চোখ লাল অথবা গোলাপি হওয়া, রাতে গাড়ি চালানোর সময় অস্পষ্ট দেখা,ঝাপসা দেখা,চোখ ব্যথা করা, ঘন ঘন মাথাব্যথা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে বুঝবেন আপনার চোখের সমস্যা হয়েছে।

 চোখের চুলকানি সমস্যাঃ

চোখ চুলকানো এক বিরক্তকর সমস্যা। অনেকের চোখ নানা কারণে চুলকায়।আর এই কারণে যারা ক্রমাগত চোখের মধ্যে হাত দিয়ে থাকেন বা অতিরিক্ত চোখ ঘষাঘষি করেন তাদের এই কারণে সমস্যা বাড়তে থাকেন।আবার অন্যদিকে পরিবেশ দূষণ,ধূলা- বালি ইত্যাদির কারণে অনেকের চোখ চুলকানো বা চোখের জালা-পোড়া হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। চোখের চুলকানি সমস্যা দূরকরণের উপায়ঃ

অ্যালার্জি দূর করুনঃ যদি অ্যালার্জির কারণে এ সমস্যা হয় তাহলে অ্যালার্জি দূর করুন। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অ্যালার্জির ঔষধ সেবন করতে পারেন।

গ্রিন টিঃ স্বাস্থ্য এবং চোখ দুটির জন্যই ভাল গ্রীন টি। চোখের সমস্যা থেকে রেহাই পেতেও গ্রীন টি ব্যবহার করা যায়। চোখ পরিষ্কারের জন্য এক কাপ পানিতে দুটি গ্রীন টির ব্যাগ দিয়ে ভালভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে সম্পূর্ণ ঠান্ডা হোয়ে গেলে এই মিশরণ দিয়ে চোখ পরিষ্কার করা যাবে।

গোলাপজলঃ চোখের সমস্যা দারুন একটি ঘরোয়া সমাধান হলো বিশুদ্ধ গোলাপ জল। চোখের জ্বালাপোড়া ভাব দূর করে চোখ ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এই পানি। চোখ পরিষ্কারের জন্য গোলাপ জল ব্যবহার করা যেতে পারে। দিনে দুবার করার গোলাপজল দিয়ে চোখ পরিষ্কার করলে উপকার পাওয়া যাবে।


লবণ পানিঃ চোখের চুলকানো ভাব এবং জ্বালাপোড়া কমাতে অত্যন্ত কার্যকর হলো লবন পানি। লবন পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কারের ফলে চোখে জমে থাকা যেকোনো ক্ষতিকর উপাদান পরিষ্কার হয়ে যায়। আর লবণে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যে কোন জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে।

এক কাপ বিশুদ্ধ পানির সঙ্গে এক চা চামচ লবণ মিশিয়ে অল্প সময় গরম করতে হবে যেন লবণ ভালোভাবে মিশে যায়। মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে চোখ ধোয়ার জন্য ব্যবহার করতে হবে। দিনে একাধিকবার ব্যবহারে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।

চোখের ঝাপসা দূর করার উপায়ঃ

প্রতিদিন 2 থেকে ৫ পান করলে দৃষ্টিশক্তি সমস্যা দূর হয় টেবিল স্পুন আমলকির রস গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দূর হয়। স্বাস্থ্যকর চোখের জন্য এ মিশন প্রতিদিন খাওয়ার পরামর্শ দেন চক্ষুবিশারদরা। যাদের দৃষ্টিশক্তি দুর্বল প্রায় চোখে ঝাপসা দেখেন তারা এই মিশ্রণ গ্রহণ করে অনেক উপকার পেতে পারেন। চোখের ঝাপসা দূর করার উপায় হল-
 
  • শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাবে সমস্যা হয় এজন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত কচু শাক, বৈশাখ, ধনিয়া পাতা ও গাজর এ ধরনের সবুজ শাকসবজি খেতে হবে।
  • চোখের মধ্য সব সময় পরিষ্কার করে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
  • সবুজ শাক-সবজি ও ডিমের সাদা অংশের লিউটিন রয়েছে।
  • ফ্যাট জাতীয় খাবার,ধূমপান, মিষ্টি জাতীয় খাবার এগুলো চোখের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো থেকে বিরত থাকুন।
  • বাসার টিভি,মোবাইল ও কম্পিউটার অর্থাৎ তেজস্ক্রিয় রোশনি থেকে চোখের দূরত্ব বজায় রাখুন।

চোখের জন্য কোন ভিটামিন দরকারঃ

মানুষের শরীরের অতি সংবেদনশীল অঙ্গ হল চোখ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কর্মব্যস্ততার প্রভাব পড়ে আমাদের চোখের উপর। একটানা বই পড়া ,বিভিন্ন ইলেকট্রিক গ্যাজেট যেমন- মোবাইল কম্পিউটার,ল্যাপটপ ইত্যাদির অতিমাত্রায় ব্যবহার আমাদের দ্রিষ্টশক্তি কমিয়ে দেয়।চোখের জন্য যেসব ভিটামিন প্রয়োজন সেগুলো হলঃ

জিংক সমৃদ্ধ খাবারঃলিভার থেকে চোখের রেটিনায় ভিটামিন এ পৌঁছে দিতে জিঙ্ক খুবই গুরুতপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এতে দ্রিসষ্টিশক্তি ভাল থাকে। কলিজা,পালংশাক ,লাল মাংস,মাশরুম,ডার্ক চকলেট ইত্যাদিতে জিংক আছে।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারঃভিটামিন সি চোখের কোষ নষ্ট হওয়া রোধ করে।রক্ত চলাচলের জন্য এই ভিটামিনটি গুরুতপূর্ণ। লেবু, টমে্টো,কমলালেবু, পেয়ারা এগুলো ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার।

ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবারঃবাদাম,চিংড়ি, ওলিভ ওয়েলে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।চোখের পানি পড়া রোধ করতে ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।

ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড যুক্ত খাবারঃরুই, কাতলা মাগুর সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদিতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায়। এগুলো চোখ ভালো রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি দেয়

চোখ ভালো রাখার ব্যায়ামঃ

শরীর সুস্থ রাখার জন্য যেমন ব্যায়ামের প্রয়োজন তেমনি চোখ ভাল রাখার জন্য ব্যায়াম প্রয়োজন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইলেকট্রিক গ্যাজেতের মাত্রারিক্ত ব্যবহার আমাদের চোখের বারোটা বাজিয়ে দেয়। তাই চোখকে সুস্থ রাখার জন্য কিছু ব্যায়াম আছে সেগুলো হলোঃ

হাতের তালুর ব্যবহারঃ প্রায় ১০-১৫ মিনিট দুই হাতের তালু একটির সাথে অপরটি ঘুষে নিন। ঘর্ষণের ফলে হাতের টালুতে যে তাপ উতপন্ন হবে,চোখ বন্ধ করে হাত দুটি চোখের উপরে রাখুন।চাপ দেবেন না হালকা হাতে তাপ দিন চোখে দিনে ৩-৪ বার এটি করতে পারেন চোখ ভাল থাকবে।

২০-২০-২০ নিয়মঃ ২০-২০-২০ চোখের ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি চোখের চাপ প্রতিরোধ করতে পারবেন। প্রতি ২০ মিনিটে একটি বিরতি নিন এবং প্রায় ২০ সেকেন্ডের জন্য আপনার থেকে ২০ ফুট দূরে একটি বস্তুর দিকে তাকান।

চোখ ঘোরানোঃগোল করে চোখের মণি ঘোরানোও চোখ ভাল রাখার জন্য একটি কার্যকর ব্যায়াম। ঘড়ির কাঁটার অভিমুখে এবং ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ৪ বার করে মনি ঘোরান তারপর চোখ বন্ধ করে রাখুন ৩-৪ সেকেন্ডের মতো দিনে দুই বার এই ব্যায়ামটা করুন। চোখের পেশী ভাল থাকবে।

পামিংঃএটি একটি আরামদায়ক ব্যায়াম যা চোখের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করতে পারে। প্রথমে আপনার হাতের তালু একে অপরের সাথে ঘষুনএবং তাদের উষ্ণ করুন। তারপরে আপনার চোখ বন্ধ করুন এবং আপনার চোখের উপর আপনার তালু রাখুন যতক্ষণ না পরের চিত্রটি চলে আসে।

জুমিংঃ চোখের ক্লান্তি দূর করতে জুম করা একটি দুর্দান্ত চোখের যোগ ব্যায়াম হতে পারে। এখানে আপনি এটি কিভাবে করতে পারেনঃ
  • প্রথমে ধাপটি সোজা হয়ে বসতে হয়। তারপর আপনার বুড়ো আঙ্গুল সোজা উপরের দিকে ধরুন।
  • আপনার বাহু প্রসারিত করুন এবং থাম্বের ডগায় ফোকাস করুন।
  • আপনার হাত ধীরে ধীরে বাঁকা করুন এবং আপনার বুড়ো আঙ্গুলটি প্রায় তিন ইঞ্চি দূরে না হওয়া পর্যন্ত কাছে নিয়ে আসুন।
  • তারপরে স্টারটিং পয়েন্টে ফিরে যান।
  • এটি তিনবার পুনরাবৃত্তি করুন।

কোন খাবার চোখের জন্য ক্ষতিকরঃ

আমাদের চোখ ভাল রাখার জন্য যেমন উপকারি খাবার আছে ,তেমনি আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো আমাদের চোখের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আমাদের কিছু খারাব খাদ্যাভাসের কারণে বয়সের আগেই চোখ দূর্বল হয়ে যায়। অতিরিক্ত মিষ্টি, প্রসেসড কার্বোহাইড্রেট খেলে দৃষ্টিশক্তি হারাতে পারে। চোখের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক খাবার প্রসেসড কার্বোহাইড্রেট যেমন- সাদা রুটি এবং পাস্তা। এর পাশাপাশি কেচাপ ও কোল্ড ড্রিস্কসও চোখের জন্য ক্ষতিকর খাবার।

লেখকের মন্তব্যঃ

প্রিয় বন্ধুরা এ পোষ্টের মাধ্যমে আমরা চোখের সমস্যা দূর করা, চোখের ঝাপসা দূর করা, চোখের জন্য কোন ভিটামিন প্রয়োজন , চোখের জন্য কোন খাবার ক্ষতিকর ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আশা করি পোস্টে পড়ে আপনারা অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। 

তাই পোস্টটি পড়ে আপনারা যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে পোস্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।
















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url