OrdinaryITPostAd

হিট স্টক কি ? হিট স্টক কখন এবং কেন হয় জানুন

শিশুদের হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়প্রিয় বন্ধুরা, হিট স্ট্রোক কি? অনেকেই জানেন আবার অনেকে জানেন না। তাই আজকে এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে হিট স্ট্রোক নিয়ে আপনাদের মনে যত প্রশ্ন আছে সব প্রশ্নের বিস্তারিত আলোচনা করব। আর্টিকেলটি যদি আপনারা পুরো মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আপনাদের প্রশ্নের উত্তর পাবেন।

নিচে আর্টিকেলে হিট স্ট্রোক কি? হিট স্ট্রোকের লক্ষণ কি কি? এবং কারণ হিট স্ট্রোকের কারণ সহ আরো অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।


হিট স্টক কি ? হিট স্টক কখন এবং কেন হয় বিস্তারিত জানুন

ভূমিকাঃ

সাধারণত ১৯৯৫ সাল থেকে এই হিজিস্ট্রোকের মূল উৎপাত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বপ্রথম দেখা যায় মৃত্যু। ধীরে ধীরে বেড়ে চলছে এটির মৃত্যুর হার। প্রতিবছর প্রায় দেখা গেছে ৬০০ জনের মৃত্যু এই তাপ প্রবাহে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে শুরু হলেও বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেশে হিট স্ট্রোক একটি মারাত্মক রোগ।

 দিন দিন অতিরিক্ত তাপমাত্রা বাড়ার কারণে মানুষের মধ্যে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। হিট স্ট্রোকে ছোট- বড় প্রায় সব ধরনের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তাছাড়া হিট স্ট্রোক থেকে মুক্তি পেতে হলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

হিট স্ট্রোক কিঃ

গরমের সময়ের একটি মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যার নাম কি ডিসটার্ব হিট স্ট্রোক। বাইরের তাপমাত্রা যাই হোক না কেন, আমাদের শরীর স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রা প্রায় স্থির রাখতে সক্ষম। প্রচন্ড গরম আবহাওয়ায় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে শরীরের তাপমাত্রা ১৫০-১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে তাকে হিট স্ট্রোক বলে। এর ফলে ঘাম বন্ধ হয়ে গিয়ে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করে।

হিট স্ট্রোকের লক্ষণ কি কি?

দিন দিন বাড়ছে গরম আর সাথে সাথে বাড়ছে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। অতিরিক্ত গরমে বেশিক্ষণ থাকা বা পরিশ্রম করলে এই সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় ধীরে ধীরে এতে ঘটে থাকে, যদিও হঠাৎ করে ঘটার সম্ভাবনাই বেশি থাকে।

হিট স্ট্রোকের অনেকগুলো লক্ষণ রয়েছে। যেগুলো জানা থাকলে নিজে যেমন সচেতন থাকা যায়, তেমনি অন্যদের কেউ সচেতন করা যায়। আসুন জেনে নেয়া যাক হিট স্ট্রোকের লক্ষণসমূহ-

প্রচন্ড তৃষ্ণা, পানি শূন্যতা, ঘামঃ হিট স্ট্রোকের আগে ব্যক্তির প্রচন্ড তৃষ্ণা অনুভব করে, সেই সঙ্গে ডিহাইড্রেশন ও আড়ষ্টতা অনুভব করতে পারে। তাছাড়া শরীর নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে।

তীব্র মাথাব্যথাঃ অতিরিক্ত গরমের কারণে মাথা ব্যাথা হতে পারে। এছাড়া গরমে মানুষের মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে। একটি লক্ষণ হতে পারে।

দ্রুত হৃদস্পন্দনঃ হিট স্ট্রোকের আগে দ্রুত হৃদস্পন্দন স্বাভাবিকের যে দ্রুত হতে পারে।

হাইপারভেন্টিলেশনঃ শ্বাসকষ্ট এবং দ্রুত ও ভারী শ্বাস- প্রশ্বাসও হিট স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে।

বমি বমি ভাবঃ মাথা ব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন ও হাইপারভেন্টিলেশন থেকে অক্সিজেনের অভাব ইত্যাদির কারণে হিট স্ট্রোকের আগে বমি বমি হতে পারে।

বিরক্তি, বিভ্রান্তি বা প্রলাপ বকাঃ অতিরিক্ত তাপের হিট স্ট্রোকের আগে মানুষ বিরক্ত বোধ করতে পারে, রাগান্বিত হতে পারে, অযৌক্তিক কথা বলতে পারে এবং এমনকি প্রলাপ বকতে পারে।

কথা জড়িয়ে যাওয়াঃ হেট স্টোর হিট স্ট্রোকের আরেকটি লক্ষণ হলো কথা জড়িয়ে যাওয়া। আক্রান্ত ব্যক্তি অসম অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করতে পারে।

পেশীতে ব্যথাঃ হিট স্ট্রোকের আগে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় তার মধ্যে একটি হলো পেশী ব্যথা। যদিও সাধারণ ব্যথা ভেবে মানুষ এটা গুরুত্ব দেয় না।

দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়াঃ অতিরিক্ত উত্তাপের শরীরে স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি কাজ করে। শরীরে আরো ক্লান্তি ও দূর্বলতা তৈরি হয়। ব্যক্তি অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে। এগুলোই হিট স্ট্রোকের লক্ষণ।

ঘাম না হওয়াঃ হিট স্ট্রোকের একটি লক্ষণ হল প্রচন্ড গরমে ঘাম না হওয়া। সাধারণত এর মানে হচ্ছে, শরীরে ঘাম হওয়ার মত পানি আর নেই বা শরীরের প্রাকৃতিক শীতল প্রক্রিয়াটি কাজ করছে
হিট স্ট্রোক এর কারণঃ
বর্তমানে আমাদের দেশে দেখা দিচ্ছে হিট স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি। আমাদের শরীরের তার সহ্য ক্ষমতা তাপ সহ্য ক্ষমতা। ৩৯, ডিগ্রি সেলসিয়াস, এই তাপমাত্রার বেশি হলেই শুরু হয় শারীরিক সমস্যা এবং অস্বাভাবিকতা।

 আর এই অস্বাভাবিকতার চূড়ান্ত পর্যায়ে হলো ! আর জেতির কারণে যেটির কারণে ধরতে পারে জীবন নাশের ঘটনা! যেসব কারণে হতে পারে হিট স্ট্রোক।

  • পারিপার্শ্বিক উচ্চ তাপমাত্রা
  • শরীরে পানি শূন্যতা বা মিনারেলস (minerals)-এর অভাব
  • কিছু ঔষধের প্রতিক্রিয়ায়, যেমন- ডাই-ইউরেটিক্স (diuretics), বিটা ব্লকারস (beta blockers), অ্যালকোহল (alcohol)
  • হার্ট (heart)-এর বা স্কিন (skin)-এর অসুখে
  • অতিরিক্ত পোশাক পরা। এতে ঘাম সহজে বাষ্পীভূত হয়ে ঘড়ির ঠান্ডা হতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
  • ঘামের মাধ্যমে হারানো তরল পূরণ করার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান না করা। অর্থাৎ পানি শূন্যতা থেকেও হিট স্ট্রোক হতে পারে।

কাদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকেঃ

হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি যাদের বেশি থাকে তারা হল-
  • শিশু ( শিশু এবং ছোট) এবং বয়স্ক ব্যক্তিরা (৬৫ বছর ),
  • প্রতিবন্ধী ব্যক্তি,
  • শ্রমজীবী ব্যক্তি যেমন রিকশাচালক, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষক,
  • যাদের ওজন বেশি,
  • যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ বিশেষ করে যাদের হৃদ রোগ বা উচ্চ রক্তচাপ আছে
  • যারা বিস্তৃত কার্যকলাপে নিযুক্ত থাকে বা দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের সংস্পর্শে থাকে,
  • নির্দিষ্ট হার্ড বা ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত রোগী এবং
  • রোগীদের ঔষধ যেমনBP ঔষধ, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট,ওভার-দ্য কাউন্টার কাশি এবং সর্দির ঔষধ।

হিট স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসাঃ

কারো হিট স্ট্রোক হলে বা অবচেতন হলে হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে যে কাজগুলো করতে হবে-

  • হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে নিয়ে যেতে হবে। রোগীর শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় কাপড় খুলে ফেলতে হবে।
  • রোগীর শরীরে বাতাস করতে হবে। তারপর কাপড় ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে গা মুছে ফেলতে হবে।
  • শরীরের তাপমাত্রা কমাতে বগল,ঘাড়, পিঠ ও কুচকিতে আইসপ্যাক ব্যবহার করতে হবে।

হিট স্ট্রোকের প্রতিকারঃ

হিট স্ট্রোকে অনেক সময় বড় ধরনের ক্ষতি হয়, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। গরমের এই সময় তাই সাবধানে থাকতে হবে। প্রচন্ড গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার জন্য যা করতে হবে।

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
  • সহজে হজম হয় এমন সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে, বাঁশি বা খোলা খাবার খাওয়া যাবে না।
  • সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা দিন বা গোসল করুন।
  • ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • যারা বাইরে রোদে কাজ করে তাদের হিট স্ট্রোক এড়ানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে লিকুইড জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। এ সময় স্যালাইন, ফলের জুস, লেবু শরবত, লাচ্ছি বা ডাবের পানি খুবই উপকারী।
  • গরমের দিনগুলোতে অ্যালকোহল বাদ দিতে হবে। কারণ, গুলো অ্যালকোহল বা সুগার ড্রিংসগুলো শরীরে পানি শূন্যতা সৃষ্টি করে।
  • হালকা রঙের ঢিলেঢালা ও সুতির পোশাক করার চেষ্টা করতে হবে। বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ও মাথায় টুপি ব্যবহার করতে হবে।
  • ফল ও সবজি খেতে হবে। ভাজাপোড়া ও তৈলাক্ত খাবার পুরোপুরি এড়িয়ে চলাই ভালো।
  • চা ও কফি পান থেকে বিরত থাকুন, এতে শরীরের তাপ বৃদ্ধি পায়। ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।
  • তাপ প্রবাহের সময় নিজেকে রক্ষা করতে বাড়ির সবচেয়ে শীতল ঘরে, বিশেষ করে রাতে সে ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডব্লিউএইচও। যদি আপনার বাড়ি ঠান্ডা রাখা সম্ভব না হয়, তবে দিনের ২-৩ ঘন্টা একটি শীতল জায়গায় (যেমন: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পাবলিক ভবন) এ সময় কাটানোর পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
  • খুব বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

পরিশেষেঃ

বর্তমানে হিট স্ট্রোক নিয়ে অনেকের মধ্যে প্রচুর আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এইজন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির সাথে সাথে হিট স্ট্রোক কি? হিট স্ট্রোকের লক্ষণ গুলো কি কি?, হিট স্ট্রোকের কারণ গুলো কি? হিট স্ট্রোক কিভাবে প্রতিকার করা যায় এগুলো সম্বন্ধে পুরোপুরি জ্ঞান অর্জন করতে হবে। 

এই আর্টিকেল আমরা হিট স্ট্রোকের যাবতীয় সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আর্টিকেলটি পরে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবেন এবং আমাদের পাশে থাকবেন। যাতে আমরা আরো নতুন নতুন পোস্ট আপনাদেরকে উপহার দিতে পারি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url