স্ট্রবেরি পুষ্টিগুণ, উপকারিতা এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন
স্ট্রবেরির দাম কত?হ্যালো বন্ধুগণ, নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে স্ট্রবেরি পুষ্টিগুণ, উপকারিতা এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই বলেই চলে। কিন্তু আপনারা স্ট্রবেরি সম্পর্কে সবকিছু জানতে চান। এজন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু আশানুরূপ কোন সমাধান পাননি। তাই আজকে আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সমস্যার সমাধান নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করতে যাচ্ছি।
নিচে আর্টিকেলে আমরা স্ট্রবেরির পুষ্টিগুণ, স্ট্রবেরির জাতসমূহ এবং স্ট্রবেরির চাষ পদ্ধতি সহ আরো অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
ভূমিকাঃ
স্ট্রবেরি একটি অত্যন্ত চমৎকার এবং লোভনীয় ফল। স্ট্রবেরি পছন্দ করে না এমন লোক খুব একটা বেশি খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্ট্রবেরি যেমন দেখতে সুন্দর, তেমনি খেতেও খুবই টেস্টি। বিশেষ করে বাচ্চাদের কাছে এটি একটি অত্যন্ত পছন্দের ফল।
স্ট্রবেরিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টি উপাদান রয়েছে। যদিও স্ট্রবেরি একটি বিদেশি ফল তবে বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক কৃষক স্ট্রবেরি চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে। কারণ স্ট্রবেরি বাজারে খুব ভালো দামে বিক্রি হয়। তবে শুধু স্ট্রবেরি চাষ করতে চাইলেই হবে না।
স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। তাই এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজকে আমরা আপনাদেরকে স্ট্রবেরির পুষ্টিগুণ, উপকারিতা সাথে সাথে স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
স্ট্রবেরির পুষ্টিগুণঃ
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে ভরপুর স্ট্রবেরি। তাছাড়া স্ট্রবেরিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক স্ট্রবেরির পুষ্টি উপাদানসমূহ-
- পানি ৯.৯৭ গ্রাম
- খাদ্য শক্তি ৩০ কি.ক্যালোরি
- আমিষ ০.৬১ গ্রাম
- চর্বি ০.৩৭ গ্রাম
- শর্করা ৭.০১ গ্রাম
- অশোধিত আঁশ ২.২৯ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম ১৩.৮৯ মি.গ্রা
- লৌহ ০.৩৮ মি.গ্রা
- ম্যাগনেসিয়াম ৯.৭২ মি.গ্রা
- ফসফরাস ১৮.৭৫ মি.গ্রা
- পটাশিয়াম ১৬৭ মি.গ্রা
- ভিটামিন সি ৫৭ মি.গ্রা
- নিয়াসিন ০.২৩ মি.গ্রা
- ভিটামিন এ ২৭ আ.এ.
স্ট্রবেরির জাত সমূহঃ
বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট স্ট্রবেরির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা বিবেচনায় বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বারি স্ট্রবেরি-১, বারি স্ট্রবেরি-২, এবং বারি স্ট্রবেরি-৩ নামে ৩টি উচ্চ ফলনশীল স্ট্রবেরির জাত উদ্ভাবন করেছে।
এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি করে স্ট্রবেরির উন্নত জাত উদ্ভাবিত হয়েছে।
স্ট্রবেরি ব্যবহারঃ
স্ট্রবেরি বিভিন্ন ধরনের খাবারে ব্যবহার করা হয়। যেমন-স্ট্রবেরি দিয়ে জ্যাম, জেলি, স্কোয়াস,জুস, আইসক্রিম, ক্যান্ডি প্রভৃতি তৈরি করা যায়। মিশ্র ফলের কক খেলে স্ট্রবেরি ব্যবহার করা যায়। এমনকি স্ট্রবেরির পিউরি করে দীর্ঘদিন ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। যা পরে প্রয়োজনমতো খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা যায়।
স্ট্রবেরির চাষ পদ্ধতিঃ
স্ট্রবেরির চাষ পদ্ধতি খুব একটা কঠিন নয়। স্ট্রবেরি চাষ করতে বেশি কিছু লাগেনা। নিচে স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধতি দেয়া হলো-
উপযুক্ত মাটি ও আবহাওয়াঃ
স্ট্রবেরি মূলত মৃদু শীত প্রধান অঞ্চলের ফসল। ফুল ও ফল আসার সময় শুকনো আবহাওয়া প্রয়োজন। দিনে ও রাতে যথাক্রমে ২০-২৬ ডিগ্রি সে. ও ১২-১৬ ডিগ্রি সে. তাপমাত্রা গ্রীষ্মায়িত জাতসমূহের জন্য প্রয়োজন। ফুল ও ফল আসার সময় শুষ্ক আবহাওয়া আবশ্যক।
বাংলাদেশের আবহাওয়া রবি মৌসুমে স্ট্রবেরি চাষের জন্য উপযোগী। উর্বর দোআঁশ থেকে বেলে-দোআঁশ যেসব জমিতে পানি জমে সেখানে স্ট্রবেরি ফলানো যাবে না।
জমি তৈরি ও চারা রোপণঃ
জমি ভালোভাবে চাষ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে অন্ততঃ ১ ফুট গভীর ঘরে জমি চাষ দিতে হবে। শেষ চাষের সময় পরিমাণমতো সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হয়।স্ট্রবেরির চারা আশ্বিন (মধ্যসেপ্টেম্বর থেকে মধ্যঅক্টোবর) মাসের রোপনের উপযুক্ত সময়।
তবে নভেম্বর-চেম্বার ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত স্ট্রবেরি চারা রোপন করা যায়। চারা রোপনের জন্য জমিতে বেড তৈরি করে নিতে হবে। প্রতিটি বেড প্রায় ৩ ফুট প্রশস্ত করে তৈরি করতে হবে। দুই বেডের মধ্যে ১-১.৫ ফুট চওড়া নালা রাখতে হবে।
প্রতিটি বেডের দুই লাইনের মধ্যে ১.৫-২ ফুট দূরত্ব রাখতে হবে। প্রতিটি লাইনে ১-১.৫ ফুট দূরে দূরে চারা রোপন করতে হবে। এই হিসেবে প্রতি শতকে প্রায় ১৫০ টি চারা রোপন করা যায়।
সার প্রয়োগঃ
ভালো ফলনের জন্য জমিতে প্রয়োজন মত সার দিতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে সার দিলে ভালো হয়। সাধারণ হিসেবে প্রতি শতক জমিতে শুকনা পঁচা গোবর সার ১০০-১২০ কেজি, ইউরিয়া সার ১ কেজি, টিএসপি সার ৮০০ গ্রাম, এমওপি সার ৯০০ গ্রাম, জিপসাম সার ৬০০ গ্রাম ব্যবহার করতে হবে।
শেষ চাষের সময় সম্পূর্ণ গোবর, টিএসপি, জিপসাম ও অর্ধেক পরিমাণে এমওপি সার জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। ইউরিয়া ও অবশিষ্ট এমওপি সার চারা রোপনের ১৫ দিন পর থেকে ১৫-২০ অনেকদিন পর পর ৪-৫টি কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
সেচঃ
স্ট্রবেরি গাছে প্রচুর পানি প্রয়োজন হয়। জমিতে রসের অভাব দেখা দিলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সেচ দিতে হবে। স্ট্রবেরি গাছ মোটেই জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারেনা। তাই বৃষ্টি বা সেচের অতিরিক্ত পানি জমে থাকলে দ্রুত তা নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
স্ট্রবেরির চারা উৎপাদনঃ
স্ট্রবেরি রানারের (কচুর লতির মত লতা) মাধ্যমে বংশবিস্তার করে থাকে। তাই পূর্ববর্তী বছরের গাছ নষ্ট না করে জমি থেকে তুলে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ হালকা ছায়াযুক্ত স্থানে রোপন করতে হবে। ওই গাছ থেকে উৎপন্ন রানারের শিকড় বের হলে তা কেটে ৫০ ভাগ গোবর ও ৫০ ভাগ পলিমাটিযুক্ত পলিথিন ব্যাগে লাগাতে হবে।
এরপর পলিথিন ব্যাগ সহ চারটি হালকা ছায়াযুক্ত স্থানে সংরক্ষণ করতে হবে। অতিরিক্ত বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষার জন্য চারার উপর পলিথিনের ছাউনি দিতে হবে। রানার এর মাধ্যমে বংশবিস্তার করা হলে স্ট্রবেরির ফলন ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
তাই একই জাতের ফলন ক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখার জন্য টিস্যু কালচারের মাধ্যমে উৎপাদিত চারা ব্যবহার করা ভালো।
অন্যান্য যত্নঃ
সরাসরি মাটির সঙ্গে স্পর্শে আসলে স্ট্রবেরি ফল পচে নষ্ট হয়ে যায়। এজন্য চারা রোপনের ২০-২৫ তিন স্ট্রবেরির বেড খড় বা কালো পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ৩ মিলিলিটার ডার্সবান-২০ ইসি ও ২ গ্রাম ব্যাভিস্টিন ডিএফ মিশিয়ে ওই দ্রবণে খড় শোধন করে নিলে তাতে উঁইপোকার আক্রমণ হয় না এবং দীর্ঘদিন তা অভিকৃত থাকে।
জমি সব সময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। গাছ লাগানোর পর তার গোড়া থেকে প্রচুর রানার বা কচুর লতির মত লতা বের হতে থাকে। এগুলো পুরো জমি থেকে ফেলে। এতে ফলন ভালো হয় না। এজন্য রানারসমূহ ১০-১৫ দিন পরপর কেটে ফেলতে হবে।
রোগ বালাই ব্যবস্থাপনাঃ
স্ট্রবেরি গেছে গাছে রোগবালার আক্রমণ হয়ে থাকে। কিভাবে এই রোগবালার আক্রমণ থেকে স্ট্রবেরি গাছকে রক্ষা করা যায় নিম্নে সেগুলো দেওয়া হলো-
পাতায় দাগ পড়া রোগঃ এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগ হয়। এ রোগের আক্রমণে ফলন ও ফলের গুণগত মান কমে যায়। এর প্রতিকারের জন্য অনুমোদিত ছত্রান ছত্রাকনাশক যেমন-সিকিউর বা রিডোমিল্ড গোল্ড প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
ফল পচা রোগঃ এ রোগের আক্রমণে ফলের গায়ে জলে ভেজা বাদামী বা কালো দাগের সৃষ্টি হয়। দাগ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং ফল খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে যায়। এজন্য ফল পরিপক্ক হওয়ার আগে অনুমোদিত ছত্রাকনাশক যেমন-নোইল ৫০ গ্রাম ডব্লিউপি অথবা ব্যাভিস্টিন ডিএফ নামক ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
মাকড়ঃ মাকড়ের আক্রমণে স্ট্রবেরি ফলন ক্ষমতা ও গুণগতমান মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। এদের আক্রমণের পাতা তামাটে বর্ণ ধারণ করে ও পুরু হয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে কুচকে যায়। গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
এ জন্য ভারটিমেক নামক মাকড়নাশক প্রতি লিটার পানির সাথে ১ মিলিলিটার হারে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।
পাখিঃ বুলবুলি পাখি স্ট্রবেরির সবচেয়ে বড় শত্রু। ফল আসার পর সম্পূর্ণ পরিপক্ক হওয়ার আগেই পাখির উপদ্রব শুরু হয়। এজন্য ফল আসার পর সম্পূর্ণ বেড জাল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে যাতে পাখি ফল না খেতে পারে।
মাতৃ গাছ রক্ষণাবেক্ষণঃ
- স্ট্রবেরি গাছ প্রখর সূর্যের তাপ এবং ভারী বর্ষণ সহ্য করতে পারেনা। এজন্য মার্চ-এপ্রিল মাসে স্ট্রবেরি বাগানে হালকা ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নয়তো নতুবা ফল আহরণ করার পর মাতৃ গাছ তুলে টবে রোপণ করে ছায়ায় রাখতে হবে।
- ফুল আহরণ শেষ হওয়ার পর সুস্থ-সবল গাছ তুলে পলিথিন ছাউনির নিচে রোপন করলে মাতৃ গাছকে খরতাপ ও ভারি বর্ষণের ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
- মাতৃ গাছ থেকে উৎপাদিত রানার পরবর্তী সময়ে চারা হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ফল সংগ্রহঃ
ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি (অক্টোবর মাসের শুরু) সময়ের রোপনকৃত বারি স্ট্রবেরি-১ এর ফল সংগ্রহ পৌষ মাসে শুরু হয়ে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলতে থাকে। ফল পেকে লাল বর্ণ ধারণ করলে ফল সংগ্রহ করতে হয়।
স্ট্রবেরি সংরক্ষণকাল খুব কম হওয়ায় ফল সংগ্রহের পরপরই তার টিস্যু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে প্লাস্টিকের ঝুড়ি বা ডিমের ট্রেতে এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে ফল গাদাগাদি অবস্থায় না থাকে। ফল সংগ্রহের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাজারজাত করতে হবে।
টবে বা ছাদ বাগানে স্ট্রবেরি চাষঃ
ইদানিং অনেকেই টবে স্ট্রবেরি চাষ করছে।শহরের বাড়িতে যাদের স্ট্রবেরি চাষের জন্য বড় জায়গা নেই তারা খুব সহজে ছাদ বাগানে বা বারান্দা বাগানে স্ট্রবেরি চাষ করতে পারেন।
টবে বা ছাদ বাগানে স্ট্রবেরি চাষ যেভাবে করবেনঃ
- মাটির টপ অথবা তেল বা পানির বোতল কেটে স্ট্রবেরি গাছ লাগানো যাবে।
- টবে বা বোতলে ছিদ্র করে নিতে হবে যাতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা থাকে।
- এরপর মাটি প্রস্তুত করে নিতে হবে (শুকনো গোবর বা জৈব সার মিক্সড করে)
- রোদ স্ট্রবেরি গাছের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান (তবে সারাদিন সরাসরি সূর্যালোক থেকে গাছ দূরে রাখতে হবে)।
- নার্সারি থেকে ভালো যাতে চারা সংগ্রহ করতে হবে।
- স্ট্রবেরি গাছে নিয়মিত পরিচর্যার প্রয়োজন হয়।
- আগাছা পরিষ্কার, মরা পাতা কেটে ফেলা, মাঝেমাঝে মাটি নিড়ানি দিয়ে আলগা করে দিতে হবে।
- প্রতিদিন অল্প করে পানি দিতে হবে।
- তবে খেয়াল রাখতে হবে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে।
স্ট্রবেরি উপকারিতাঃ
সাধারণত স্ট্রবেরি একটি বেরি জাতীয় ফল। বেরি জাতীয় সব ধরনের ফলে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি গুণ ও উপকারিতা থাকে। স্ট্রবেরি একটি বিদেশি ফল হলেও এখন প্রচুর পরিমাণে বাংলাদেশের চাষাবাদ হচ্ছে। স্ট্রবেরি প্রচুর পরিমাণে স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক স্ট্রবেরি স্বাস্থ্য উপকারিতা গুলো-
হার্ট ভালো রাখেঃ স্ট্রবেরিতে উচ্চ মানের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা খারাপ কোলেস্টেরল দ্বারা আক্রান্ত কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও রক্তের বাহ্যিক বাহ্যিক ত্বককে ত্বরান্বিত করে উন্নত রক্ত প্রবাহ সৃষ্টি করে। এর উচ্চ ফাইবার কনটেন্ট ও ভিটামিন সি আদর্শ কার্ডিয়াক স্বাস্থ্য প্যাক হিসেবে কোলেস্টের হ্রাস করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ স্ট্রবেরিতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি করে। সাধারণত কাশি ও ঠাণ্ডার সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি আমাদের দৈনিক চাহিদার প্রায় ৫০ শতাংশ পূরণ করে। চাইলে শীতেও স্ট্রবেরি খেতে পারেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাধি হলো ক্যান্সার। কিছু ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্ভব হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগটি প্রতিকারের কোন উপায় নেই। আর তাই প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করা ভালো।
তাই ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন স্ট্রবেরি। কারণ স্ট্রবেরি ক্যান্সার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মস্তিষ্কের জন্য উপকারীঃ গবেষণায় দেখা গেছে যে, স্ট্রবেরি মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য বেশ উপকারী। স্ট্রবেরি ও ব্লুবেরি খাওয়া বেশ কয়েকজনের ওপর চালানো এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, তাদের বয়সের তুলনায় মস্তিষ্ক বেশি ভালো কাজ করে। স্ট্রবেরিতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা মস্তিষ্কে কার্যকারিতা বাড়াতে কাজ করে।
স্ট্রোকে ঝুঁকি কমাতেঃ স্ট্রবেরিতে থাকা পুষ্টি উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে হলে নিয়মিত স্ট্রবেরি খেতে পারেন।
ত্বক ও চুলের যত্নেঃ ভিটামিন সি ত্বককে ফ্রেশ রাখে। আর স্ট্রবেরিতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি এবং এটি বয়সের ছাপ কমাতেও কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। স্ট্রবেরিতে থাকা ফলিক এসিড, বি৫, বি৬ চুলকে শক্ত ও মজবুত রাখে।
হাড়ের জন্য উপকারীঃ স্ট্রবেরিতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম শিশুদের হাড় গঠনের জন্য উপকারী। এছাড়া এসব উপাদান হাড়কে শক্ত ও মজবুত রাখে।
পরিশেষেঃ
স্ট্রবেরি চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। বাংলাদেশের জলবায়ুতে রবি মৌসুম স্ট্রবেরি চাষের জন্য উপযোগী। স্ট্রবেরি চাষ করলে খুব অল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায়।ফলে লাভ বেশি হয়। তাই আজকে আর্টিকেলে আমরা স্ট্রবেরির চাষ পদ্ধতি বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং সাথে ছাদে বা টবে কিভাবে স্ট্রবেরি চাষ করা যায় সে বিষয়েও আলোচনা করেছি।
আশা করি উক্ত আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছে। আর যদি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা সত্যিই উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের পরিচিত আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন। আর এরকম নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথে থাকবেন এবং আমাদের www.safanbd.com ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন।
সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url