সিজারের পর মায়ের যত্ন এবং খাবারের তালিকা জানুন
সিজারের পর শোয়ার নিয়মকিভাবে সিজারিয়ান মায়ের যত্ন নিতে হয় এবং কি ধরনের খাবার দিতে হয় সে বিষয়ে আপনাদের তেমন জানাশোনা নেই। এ বিষয়ে আপনারা ক্লিয়ার ভাবে জানতে চাচ্ছেন। কিন্তু অনেক খোঁজার পরেও এ বিষয়ে তেমন কোন আইডিয়া পাননি। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে সিজারের পর মায়ের যত্ন এবং খাবারের তালিকা নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করতে যাচ্ছি। আশা করি পুরো আর্টিকেলটি আপনারা মনোযোগ সহকারে পড়বেন।
নিচে আর্টিকেলে আমরা সিজার কি, সিজারিয়ান পদ্ধতি এবং সিজারের পর মায়ের যত্নসহ আরও অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
ভূমিকাঃ
বর্তমানে সিজার একটি সাধারণ ব্যাপার অনেকেই মনে করেন। কিন্তু একথা মোটেও ঠিক নয়। আসলেই সিজার একটা বড় ধরনের অপারেশন। এই অপারেশনে মায়ের জীবনে ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাই এটাকে মোটেই সাধারণ ব্যাপার মনে করার কোন মানে হয় না।
আগে প্রাকৃতিকভাবে ডেলিভারি হলেও এখন বেশিরভাগ মানুষ সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা ডেলিভারি করে থাকে। এর কারণ হচ্ছে অনেকেই ব্যথার ভয়ে আবার অনেকেই নানা ধরনের রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, পেটের মধ্যে বেবি বড় হয়ে যাওয়া ইত্যাদির কারণেও সিজার করে থাকে।
সিজারের সময় যেমন একজন মায়ের জীবনে ঝুঁকি থাকে, তেমনি সিজারের পরেও সিজারিয়ান মায়ের যথেষ্ট ঝুঁকি থাকে। তাই সিজারের পর সিজারিয়ান মায়ের যত্ন নেওয়া দরকার। তাই আজকে আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে সিজারিয়ান মায়ের যত্ন এবং খাদ্যের তালিকা নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
সিজার কি?
সিজারিয়ান সেকশন, যা সি-সেকশন, সিজারিয়ান বা সিজারিয়ান ডেলিভারি নামেও পরিচিত, একটি অস্ত্রপাচার পদ্ধতি যার মাধ্যমে মায়ের পেটে একটি একটি সেদনের মাধ্যমে এক বা একাধিক বাচ্চা প্রসব করা হয়। এটি প্রায়শই সঞ্চালিত হয় যার কারণ যোনিপথে ডেলিভারি মা বা শিশুকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।
সিজারিয়ান পদ্ধতিঃ
সিজার একটি অস্ত্রপাচার পদ্ধতি যেখানে ত্বক, ত্বকের নিচের চর্বি, পেটের পেশি, পেটের পর্দা, জরায়ু কেটে বাচ্চা বের করা হয়। অপারেশনের আগে কিছু প্রস্তুতি আছে সেগুলো জেনে নেয়া যাক-
- অপারেশন এর ৬-৮ ঘন্টা আর্থ আগে থেকে সব রকম খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকতে হবে।
- সি-সেকশন অপারেশনের আগে আপনার কোমর থেকে পা (আংশিক) বা পুরোপুরি অজ্ঞান করা হয়। অবস্থার উপর নির্ভর করে এটা নির্ধারণ করা হয়।
- এনেস্থিসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করার পূর্বে এনেস্থিসিয়া ও অপারেশনের ঝুঁকি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আপনার পরিবারের সদস্যকে একটি বিশেষ কর্মের সম্মতিসূচক সই করতে হয়।
- সি-সেকশন অপারেশনের পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে ৩০-৫০ মিনিট সময় লাগতে পারে।
সিজারের পর মায়ের যত্নঃ
সি-সেকশন যেহেতু একটি বড় ধরনের অপারেশন তাই এ অপারেশনের পর একজন মায়ের আগের মত পরিপূর্ণভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ অপারেশনের পরে স্বাভাবিক জীবন যাপনে ফিরে আসতে প্রায় দেড় মাস সময় লেগে যায় একজন মায়ের।
কেননা এই অপারেশনের পর একজন মায়ের শরীর দিয়ে অনেক ধকল যায়। এর প্রভাব শুধু একজন মায়ের শারীরিক স্বার্থের উপর নয় বরং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর পড়ে। আর এজন্যই এই পরিবর্তন একের মায়ের একেক রকম হতে পারে।
তাই সি-সেকশন অপারেশনের পরবর্তী সময়ে পরিপূর্ণ সঠিক যত্ন ও সচেতনতা দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সি-সেকশন অপারেশনের পর একজন প্রসূতি মায়ের যত্নে কি কি করা আবশ্যক-
সিজারের পরে ইনফেকশন এর লক্ষণঃ
সিজারের পরে অনেকেরই কাটা জায়গায় ইনফেকশন হয়ে থাকে। এজন্য সিজারের পরে ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দেয় কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ইনফেকশনের লক্ষণের মধ্যে যে বিষয়গুলো দেখা দিবে সেগুলো হল-
- ফুলে যাওয়া
- ব্যথা হওয়া
- অনেক লাল হয়ে যাওয়া
- জায়গাটি থেকে পুঁজ বা দুর্গন্ধযুক্ত তরল বের হওয়া
- জ্বর আসা জ্বর
এমন কোন লক্ষণ দেখা দিলে তৎক্ষণার ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কেননা ইনফেকশন হলে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা না নিলে এতে করে ইনফেকশন রক্তেও ছড়িয়ে যেতে পারে যা খুবই বিপদজনক একজন সিজারিয়ান রোগের জন্য।
সিজারের পর কাটা স্থানের যত্নঃ
কাটা স্থানটি নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে তবে বেশি ঘষামাজা করা যাবে না। পরিষ্কারের পর যে কাজটি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হল কাটা স্থানটি ভালো করে শুকিয়ে নেওয়া।
- কাটা স্থানটি ঘেমে ভিজে গেলে তৎক্ষণাৎ শুকিয়ে নেওয়া।
- যথাসম্ভব পরিষ্কার ও সুতি কাপড়ের ঢিলে ধালে পোশাক পরিধান করা।
- যদি শরীরের সাথে না মেশে এমন প্রকৃতি সুতা দিয়ে সেলাই করা হয় তাহলে ৫-৭ দিন পর সেলাই কাটতে বলা হয় সেক্ষেত্রে সেলাই কাটিয়ে উক্ত কাঁটা স্থানটিতে মলম লাগাতে হবে।
ঘুম ও বিশ্রামঃ
সিজারের পর একজন মায়ের জন্য পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রাম অপরিহার্য। কেননা সিজারের কিছুদিন আজ থেকে একজন মা ঠিকমতো ঘুমাতে পারে না। তাই চেষ্টা করবেন প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর। তাছাড়া এত বড় অপারেশনের পর শরীরকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দেওয়া দরকার।
আর বাচ্চা যখন ঘুমায় সেসময় আপনিও বাচ্চার সাথে ঘুমাতে পারেন। এই সময় যেহেতু পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমের দরকার তাই তাই আপনি চেষ্টা করবেন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর। এতে আপনার শরীর দিয়ে যে ধকল গেছে তা সামলিয়ে উঠতে পারবেন খুব তাড়াতাড়ি।
সাবধানে হাসি ও কাশি দিতে হবেঃ
সিজারের পর অবশ্যই আপনাকে একজন মাকে সাবধানে হাসি ও কাশি দিতে হবে। কারণ এ সময় যদি জোরে হাসি ও কাশি দেয় তাহলে পেটের নাড়ে টান পড়ে ব্যথা উঠতে পারে পারে। যা দীর্ঘ ক্ষণ স্থায়ী হতে পারে। তাই এ সময় হাসি ও কাশি দিতে গেলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
হালকা হাঁটাচলাঃ
সিজারের পর কয়েকদিন বিশ্রাম নেওয়ার পরে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ধীরে ধীরে হাঁটাচলা শুরু করতে হবে। এটি আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চাল ক্ষমতা বাড়াবে এবং আপনার শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করবে। একই সময়ে টানা ৩০ মিনিট হাঁটা যাবে না।
৫-১০ মিনিট ধীরে ধীরে হাঁটবেন। কারন দ্রুত হাটার পর কাটা জায়গায় টান পড়বে এবং ব্যথা করবে। কারণ এ সময়ে কোন কঠিন ব্যায়াম করা যাবে না তাহলে সেলাইয়ের স্থানে সমস্যা হতে পারে।
কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন?
- হঠাৎ করে যদি জ্বর আসে এবং (তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি থেকে ১০৩ ডিগ্রি এর অধিক) হলে।
- অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে।
- কাটা জায়গায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হলে।
- কাটা বা সেলাই এর জায়গা ফুলে উঠলে,পুঁজ বা পানি বের হলে।
- শ্বাসকষ্ট বাবুকে ব্যথা হলে।
- স্তন ফুলে গেলে বা দুধ জমে গেলে।
- পা ফুলে গেলে।
চিকিৎসকের নিয়মিত পরিদর্শনঃ
সিজারের পর মহিলাদের অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেমন মাথাব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, কাটা জায়গায় ব্যথা, জ্বর, পা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি। আর এ ধরনের সমস্যা যদি কোন মহিলার মধ্যে দেখা যায় তাহলে তাকে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া সিজারিয়ান রোগীকে সিজারের প্রথম কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত ডাক্তারের কাছে চেকআপ করাতে হবে।
ঔষধ এবং ব্যথায় করণীয়ঃ
কাটার স্থানে অতিরিক্ত ব্যথা হলে চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যথা কমানোর জন্য ঔষধ সেবন করুন ।নিজে থেকে কোন ব্যাথার ঔষধ সেবন করবেন না।
ভারী কাজ থেকে বিরত থাকাঃ
সিজারের পর অন্তত দেড় মাস ভারী কোন কাজ করা যাবে না। কেননা এ সময় ভারী কাজ করলে সেলাইয়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ সময়ে একদম কোন ভারী কাজ করা যাবে না। চিকিৎসকদের মতে এ সময় বাচ্চার চেয়ে ভারী কোন কিছু তোলা যাবে না। আর নিচু হওয়া যাবে না। কারণ নিচু হওয়ার ফলে পেটে চাপ পড়ে যায় যার জন্য সেলাই এর স্থানে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোঃ
বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো শুধু বাচ্চার জন্যই উপকারী নয় বরং এটা একজন মায়ের জন্যও উপকারী। যেসব মহিলারা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায় সেসব মহিলাদের ওজন অন্য মহিলাদের তুলনায় খুব তাড়াতাড়ি ঝড়ে যায়। কারণ বুকের দুধের মাধ্যমে বাচ্চাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি দিতে গিয়ে মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি বের হয়ে যায়।
আর এজন্যই মায়ের ওজন দ্রুত কমে যায়। আর এজন্য বাচ্চাকে শুধু ছয় মাস নয় অন্তত এক বছর নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত।
কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ঃ
সিজারের পর অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন্য মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই এ সময়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যুক্ত খাবার খেতে হবে। যেন পেট নরম থাকে। এ সময়ে এমন খাবার খেতে হবে যে সমস্ত খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করেন যেমন ওটস,ফলমূল ইত্যাদি।
সাথে তোর জাতীয় খাবার দুধ ও পানি বেশি করে খেতে হবে। কারণ গরম দুধ পেটকে নরম করতে সাহায্য করে থাকে তাই এ সময় গরম দুধ পান করবেন।
যৌন মিলন থেকে বিরত থাকুনঃ
সিজারের পর যে জিনিসটির প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে সেটি হল যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে। কম করে হলেও অন্তত দেড় মাস কোন ধরনের যৌন মিলন করা যাবে না। কারণ এ সময় যৌন মিলন করলে সিজারিয়ান রোগীর বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। তাই এ সময় যৌন মিলন থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।
মানসিক যত্নঃ
সিজারের পর মায়েরা শারীরিক দুর্বলতার পাশাপাশি মানসিক চাপেও থাকতে পারেন। নতুন মায়ের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে পরিবার ও বন্ধুদের মানসিক সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সহযোগিতায় মা সহজে মানিয়ে নিতে পারেন এবং সন্তান লালন-পালন করতে সমর্থ হন। তাই কিছু সময় সময় নিজের বন্ধুদের সাথে কথা বললে মন ভালো থাকবে।
রক্তস্বল্পতার জন্য যেসব খাওয়া খাবার খাওয়া উচিতঃ
সিজারের পর রক্তস্বল্পতায় এড়াতে আয়রনযুক্ত খাবার খাওয়া জরুরী। কারণ এত বড় অপারেশনের পর শরীর থেকে মায়ের অনেক রক্ত বের হয়ে যায়, তাই এ সময় রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। আর এজন্য এ সময় প্রচুর পরিমাণে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে তাহলে রক্তস্বল্পতা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
কতদিন পর বাচ্চা নেওয়া যায়ঃ
সিজার যেহেতু একটি বড় ধরনের অপারেশন সেহেতু এখান থেকে সুস্থ হতে অনেকদিন সময় লেগে যায় তাও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেনা। আর পুরোপুরি সুস্থ না হয়ে যদি কেউ বাচ্চা নেয় তাহলে সেটা মায়ের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে, এমনকি মায়ের মৃত্যুও হতে পারে।
তাছাড়া একজন সিজারিয়ান মহিলা সবদিক থেকে পুরোপুরি ভাবে সুস্থ হতে প্রায় দুই বছর লেগে যায়। এজন্য যারা সিজারিয়ান মহিলা আছেন তারা অবশ্যই বাচ্চা নেওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বাচ্চা নিবেন।
সিজারের পর মায়েদের খাদ্য তালিকাঃ
সিজারের পর একজন মায়ের খাদ্যের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। সিজারের কারনে একজন মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্ত বের হয়ে যায়। যার ফলে তার শরীরে আয়রন এবং ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়।
আর এজন্যই সিজার উপর মাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আয়রনের জাতীয় এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে। তাই সিজারের পর একজন মাকে কি ধরনের খাবার খেতে হবে তা নিম্নে দেওয়া হলো-
ডিমঃ সিজারের পর একজন মহিলার খাবারের তালিকা অবশ্যই ডিম রাখতে হবে। কারণ ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ডি এবং এইচ ডি এল এবং ডিম হল কোলেস্টেরলের উৎস। তাছাড়া ডিমে রয়েছে আমিষ ও প্রোটিন যা একজন সিজারিয়ান নারীর শরীর ও বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
মাছ ও মাংসঃ মাছ ও মাংসের প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও হাই প্রোটিন থাকে। তাই সিজারিয়ান নারীর খাদ্য তালিকায় নিয়মিত মাছ ও মাংস রাখতে হবে।
বাদামঃ বাদাম একজন সিজারিয়ান নারীর শরীরের জন্য বেশ উপকারী একটি খাবার। বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন ই, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড এবং ফাইবার।
কালোজিরাঃ কালোজিরা একজন সিজারিয়ান নারীর জন্য আদর্শ খাবার। সিজারের পর একজন মাকে কালোজিরা খাওয়ালে কালোজিরা মায়ের বুকে দুধ উৎপাদনে সহায়তা করে। এতে করে শিশু সঠিক পুষ্টি পায় যা শিশুর বেড়ে উঠতে সহায়তা করে।
পর্যাপ্ত পরিমাণ পানিঃ সিজারের পর মায়েদের বেশি বেশি পানি পান করতে হবে। বেশি বেশি পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। কারণ সিজারিয়ান মায়েদের সিজারের পর যে সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় সেটা হলো কোষ্ঠকাঠিন্য।
এমনকি কোষ্ঠকাঠিন্যর কারণে কাঁটাস্থান শুকাতেও সময় বেশি লাগে। কারণ সিজারিয়ান মায়েরা ডিহাইড্রেশনের বড় ঝুঁকিতে থাকেন যার ফলে তাদেরকে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
সুষম ও পুষ্টিকর খাবারঃ সিজারিয়ান মায়েদের খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি সুষম ও পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে। এই সময় পুষ্টিকর খাবারের কোন বিকল্প নেই। আর পুষ্টিকর খাবার বলতে শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এমন খাদ্যকে বুঝায়।
বিশ্বের সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবার গুলো হলোঃ ডালিম, টমেটো, বাঁধাকপি, কলা, আতা ফল, পুদিনা পাতা, ধনেপাতা, মিষ্টি কুমড়া, বরবটি, মরিচ, লেটুস পাতা ইত্যাদি। সিজারিয়ান মহিলাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য নিয়মিত এসব খাবার খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবারঃ পেটের সার্জারি, সিজার, ব্যথার ঔষধ এর জন্য ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও আঁশযুক্ত খাবার পেট পরিষ্কার করে,কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং পায়খানা নরম করে।
আয়রনসমৃদ্ধ খাবারঃ প্রত্যেক চিকিৎসকই বলেন মহিলাদের জন্য গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মাসিকের সময় রক্তক্ষরণের ক্ষতি মেটানোর জন্যও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
সিজারিয়ান মায়েরা আয়রন সমৃদ্ধ যে ৭ খাবার সব সময় খাবেন সেগুলো হলো-পালং শাক, জলপাই, রেডমিট, শুঁটকি জাতীয় খাবার, ডার্ক চকলেট, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, গরুর কলিজা ইত্যাদি।
ফলমূলঃ সব ধরনের রোগের ফলমূল খাওয়া খুব ভালো, তেমনি গর্ভবতী মহিলাদের ও সিজারিয়ান মায়েদেরও কিছু স্বাস্থ্যকর ফলমূল খেতে হয় সেগুলো হলো-আপেল, তরমুজ, কমলা, কলা, পেয়ারা ইত্যাদি। এসব ফলমূল খেলে সিরিয়াল সিজারিয়ান মহিলাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়।
পরিশেষেঃ
কোন অপারেশনকেই ছোট মনে করা উচিত নয়। কারণ অপারেশন মানেই ঝুঁকি। সে যেকোনো ধরনের অপারেশনের হোক না কেন। তেমনি সিজারিয়ান একটি বড় ধরনের অপারেশন। আর এই অপারেশনের পর একজন মায়ের নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
তাই এই সময়ে সিজারিয়ান মায়ের পেশাল যত্ন নেওয়া স্পেশাল যত্ন নেওয়া দরকার। এজন্য এ আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে সিজারিয়ান মায়ের জন্য এবং খাদ্যের তালিকা নিয়ে বিস্তারিতভাবে জানাতে চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে অনেক জ্ঞানবহুল মনে হবে এবং আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা অনেক কিছুই জানতে পারবেন।
আর আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা সত্যি কিছু জ্ঞান অর্জন করতে করে থাকেন তাহলে আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবেন। তাছাড়া এরকম নতুন নতুন কনটেন্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের চোখ রাখুন।
সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url