OrdinaryITPostAd

অনলাইনের মাধ্যমে হালাল উপায়ে ইনকাম করার ১০টি উপায়

হালাল ভাবে টাকা কামানোর উপায়অনলাইনে ইনকাম করা যায় এটা কম বেশি সবাই জানে কিন্তু অনলাইনে যে হালাল ভাবে ইনকাম করা যায় এটা অনেকেরই অজানা। তাই এ আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জানাতে যাচ্ছি অনলাইনের মাধ্যমে হালালভাবে ইনকামের বেশ কয়েকটি উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।

নিচে আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা অনলাইনে হালাল ইনকাম কি, অনলাইন ব্যবসা কি হালাল এবং অনলাইনে হালাল উপায়ে ইনকাম করার উপায়সহ আরও অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

অনলাইনের মাধ্যমে হালাল উপায়ে ইনকাম করার ১০টি উপায়

ভূমিকাঃ

বর্তমানে অনলাইন  ইনকামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আগে যদিও অনলাইন সম্পর্কে মানুষের তেমন জানাশোনা ছিল না। কিন্তু বর্তমানে এমন কোন লোক নাই যে অনলাইন সম্পর্কে জানে না। বেশিরভাগ মানুষই এখন অনলাইনের মাধ্যমে ইনকাম করে থাকে।
 
কিন্তু সবার মনে একটা প্রশ্নই আসে সেটা হল অনলাইনে মাধ্যমে ইনকাম করা হালাল নাকি হারাম। তাই আজকে আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে জানাচ্ছি অনলাইনে মাধ্যমে ইনকাম করার কিছু উপায় যে মাধ্যমগুলো থেকে হালালভাবে ইনকাম করা যায়।

হালাল ইনকাম কিঃ

হালাল উপার্জন মানে-বৈধ ও ন্যায্য উপায়ে অর্থ সম্পদ আয় করা। কেননা একজন মুসলমানের জন্য হালাল উপার্জন করা ফরজ। মুসলমানদের জন্য সুদের উপার্জন হারাম, ঘুষের উপার্জন হারাম। এমনকি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ইত্যাদির মাধ্যমে উপার্জন করা অর্থও হারাম।

অনলাইন হালাল ইনকাম কি?

অনলাইনে হালাল ইনকাম বলতে এমন আয়কে বোঝায় যা ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত ইনকাম। অর্থাৎ অনলাইন ইনকাম বলতে বৈধ আয়, প্রতারণা ও অন্যায় বিহীন আয় এবং সুদ মুক্ত আয় ইত্যাদিকে বুঝায়।

অনলাইন ব্যবসা কি হালাল?

ইসলামের যেসব ব্যবসায়-হালাল হারাম দুই দিকের সম্ভাবনা রয়েছে এমন ব্যবসায় মূলনীতি হল যে পদ্ধতি দ্বারা হারাম ও হালাল উভয় কাজ করারও সুযোগ রয়েছে, তা কাউকে প্রদান করা, বিক্রি করা সবই জায়েজ। সে হিসেবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভালো ও মন্দ উভয়ের কাজই করা যায়। তাই এর ব্যবসা জায়েজ আছে।

হালাল উপায়ে ইনকাম করার ১০ টি উপায়ঃ

জীবনে প্রতিটি পদে হালাল ইনকামের গুরুত্ব অপরিসীম। আর ইসলাম শরীয়াতে জীবন যাপন করতে হালাল ইনকামের কোন বিকল্প নেই । আর আপনি চাইলে খুব সহজেই অনলাইন থেকে হালাল উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন। তাছাড়া অনলাইনে হালাল ইনকামের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। নিম্নে সেগুলা দেওয়া হলো-

ফ্রিল্যান্সিংঃ বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং অনলাইন ইনকামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। এমনকি ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে আপনি হালাল উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিংয়ে যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো হালাল কাজ। যেমনঃ

  • গ্রাফিক্স ডিজাইন
  • ওয়েব ডেভলপমেন্ট
  • ডাটা এন্ট্রি
  • ডিজিটাল মার্কেটিং কন্টেন্ট রাইটিং

এসব কাজ আপনি যে কোন প্ল্যাটফর্ম যেমন- আপ ওয়ার্ক, ফাইবার, ফ্রিল্যান্সার ইত্যাদি মাধ্যমে ইত্যাদি মাধ্যমে হালাল উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন।

ড্রপ শিপিং বা ই- কমার্সঃ ড্রপ শিপিং বা ই- কমার্স ব্যবসায় আপনি পণ্য বিক্রি করতে পারেন, যেখানে পণ্য কেনার প্রয়োজন হয় না। আপনি সরাসরি গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সরবরাহকারীর মাধ্যমে তাদের কাছে পণ্য পাঠাতে পারেন।তবে এসব পণ্য পাঠানোর পূর্বে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে যে বিক্রি করা পণ্য হালাল এবং হারাম পণ্যের সাথে জড়িত নয়।

ব্লগিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ ব্লগ তৈরি করে অথবা ইউটিউব-এর মত প্ল্যাটফর্মে ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে আয় করা যায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য প্রমথ করে কমিশন আয় করা যায়। তবে অবশ্যই হারাম পণ্য বা সেবা প্রমোট করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

অনলাইন কনসাল্টিংঃ আপনি যদি কোন ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হন যেমন, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, ফিটনেস ইত্যাদি তবে অনলাইনে কনসাল্টিং সার্ভিস প্রদান করতে পারেন।

অনলাইনে কোর্স বিক্রি করেঃ আপনার দক্ষতা অনুযায়ী অনলাইন কোর্স তৈরি করে প্ল্যাটফর্মে আপলোড করতে পারেন। যারা শিখতে আগ্রহী, তারা আপনার কোর্স কিনবে এবং আপনি আয় করতে পারবেন।

অনলাইন টিউশনঃ আপনি যদি কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন, তবে অনলাইন প্লাটফর্ম যেমন Udemy, Skillshare বা YouTube-এর মাধ্যমে অনলাইন কোর্স তৈরি করতে পারেন। এছাড়াও Zoom বা Google Meet-এর মাধ্যমে সরাসরি ছাত্রদের পড়াতে পারেন।

পণ্য সেল করেঃ আপনি ফেসবুক পেজের মধ্যে ঢুকলে দেখবেন অনেকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য সেল করে। চাইলে আপনিও এই কাজটি করার মাধ্যমে আয় করতে পারেন। অথবা একটি এ ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন পণ্য আপনি সেল করে অনলাইনের সহযোগিতায় হালাল উপায়ে ইনকাম করতে পারেন।

আর্টিকেল রাইটিংঃ আর্টিকেল রাইটিং করে আপনি অনলাইনে হালাল হবে ইনকাম করতে পারেন। একটি ওয়েবসাইটে ইনকাম করতে হলে অনেকগুলো আর্টিকেলের প্রয়োজন। কিন্তু একজন ওয়েবসাইটের মালিকের পক্ষে এতগুলো আর্টিকেল লেখা সম্ভব হয় না।

 সেজন্য তারা আর্টিকেলের জন্য অনেক ভালো পরিমাণ টাকার বিনিময়ে আর্টিকেল রাইটার হায়ার করে থাকেন। এ জন্য আপনি চাইলে আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ শিখে একজন আর্টিকেল রাইটার হিসেবে অনলাইনের মাধ্যমে হালাল উপায়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন। 

আর এজন্য অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্লাটফর্ম রয়েছে। যেমন: Upwork, freelancer.com,fiver এইসব আপনি চাইলে এইসব প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আর্টিকেল রাইটিং এর কাজ গুলো নিতে পারেন।

ভিডিও এডিটিংঃ বর্তমানে দিনে দিনে ভিডিও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের সংখ্যা বেড়েই চলছে। এদের ভিতর অনেকেই কিন্তু নিজে নিজে ভিডিও এডিট করতে পারেনা। তার জন্য এরা যে ভিডিও এডিটিং এর কাজ জানে তাদেরকে হায়ার করে থাকে।

 তাই আপনি যদি ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখে একজন ভিডিও এডিটর হোন তবে অনলাইন এর মাধ্যমে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করে হালাল উপায়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ সৃজনশীল চিন্তা ও চেতনার সমন্বয়ে কোন একটি মেসেজকে চিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করাই হল গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ। ইউটিউবের থাম্বনাইল এডিট করার পাশাপাশি বিভিন্ন কোম্পানির পণ্যের জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনের প্রয়োজন হয়।

 তাই আপনি চাইলে গ্রাফিক ডিজাইনিংয়ের কাজ শিখে একজন গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে অনলাইন এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন ।

এড দেখে টাকা ইনকাম কি হালালঃ

এড দেখে টাকা ইনকাম করা হালাল নাকি হাল খারাপ হারাম হারাম তা নির্ভর করে বিজ্ঞাপনের ধরন এবং এর মাধ্যমে প্রচারিত পণ্যের উপর। ইসলাম শরীয়াতের দৃষ্টিকোণ থেকে যদি বিজ্ঞাপনে এমন কোন বিষয় থাকে যা যা হারাম বা ইসলাম বিরোধী (যেমন সুদ, মদ, জুয়া, অশ্লীলতা ইত্যাদি) তবে সেই ধরনের এড দেখে বা এর প্রচারণার মাধ্যমে টাকা ইনকাম করা হারাম হতে পারে।

 তবে যদি বিজ্ঞাপনটি হালাল পণ্য বা সেবার প্রচার করে এবং এর মাধ্যমে কোন ক্ষতিকর বা হারাম কাজের দিকে মানুষকে উৎসাহিত না করা হয়, তবে এটি হালাল হতে পারে। তাই এড দেখে বা এড দেখিয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করার আগে অবশ্যই দেখতে হবে বিজ্ঞাপন গুলো ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে শরীয়ত বিরোধী না কি। আর যদি বিজ্ঞাপন গুলো শরীয়ত বিরোধী হয় তাহলে এড দেখিয়ে ইনকাম করা হালাল হবে না।

ইউটিউবের ইনকাম কি হালালঃ

ইউটিউবের ইনকাম হালাল বা হারাম হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে youtube এর মাধ্যমে আয় করা কন্টেন্টের ধরন ও আয়ের পদ্ধতির উপর। ধরেন আপনি যে ভিডিও তৈরি করছেন বা প্রচার করছেন তা যদি ইসলামের নীতিমালা অনুযায়ী হয় এবং কোন অশ্লীলতা, মিথ্যা তথ্য বা ক্ষতিকর বিষয় প্রচার না করে, তাহলে সেই আয় হালাল হতে পারে।

 আবার যদি কোন মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর কন্টেন্ট বা অন্যকে পতির দিকে ক্ষতির দিকে ধাবিত করে এমন কিছু প্রচার করা হলে তা ইসলামে নীতির পরিপন্থী হবে।

পরিশেষেঃ

 জীবিকার তাগিদে মানুষ বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করে থাকে। তেমনি বর্তমানে মানুষ অনলাইনের মাধ্যমে ইনকাম করছে। যদিও অনলাইনে ইনকাম করার বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। এ মাধ্যম গুলোর মধ্যে সবগুলো মাধ্যম কিন্তু হালাল নয়। 

এরমধ্যে কিছু কিছু মাধ্যম থেকে হালাল উপায়ে ইনকাম করা যায়। তেমনি কিছু মাধ্যম নিয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আর্টিকেলটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

 তাই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করবেন। আর এরকম নিত্যনতুন ট্রপিক পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url