পানি ফলের চাষ পদ্ধতি, পুষ্টিগুণ এবং এটি খাওয়ার ১০টি উপকারিতা জানুন
আজকের আর্টিকেলে আমরা পানি ফলের পুষ্টিগুণ, পানিফলের ঔষধি গুন ও পানিফল খাওয়ার
উপকারিতাসহ আরও অন্যান্য পয়েন্ট নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি।
ভূমিকাঃ
পানিফল একটি শীতকালীন ফল। এ ফল শীতকালে প্রচুর পরিমাণ বাজারে কিনতে পাওয়া
যায়। তাছাড়া পানিফলকে অনেকে আবার সিঙ্গারাও বলে থাকে। পানিফল অত্যন্ত
সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি ফল। এমনকি এ ফল বাজারে সহজলভ্য এবং
দামেও কম। তাই এই ফল দিয়ে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা সহজেই
পূরণ করা সম্ভব।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা এর চাষ করতে চায় কিন্তু এ বিষয়ে তাদের কোন
ধারনা নেই। তাই আজকে আর্টিকেলে আমরা পানি ফলে চাষ পদ্ধতিসহ পুষ্টিগুণ ও
উপকারিতা আলোচনা করেছি।
পানি ফলের পুষ্টিগুণঃ
পানির ফলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পানি ফলে খাদ্য
উপাদান -খাদ্যশক্তি ৬৫ কিলোক্যালরি, জলীয় অংশ ৮৪.৯ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৯
গ্রাম, খাদ্যআঁশ ১.৬ গ্রাম, আমিষ ২.৫ গ্রাম, চর্বি ০.৯ গ্রাম, শর্করা ১১.৭
গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৮ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.১৮
মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.০৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মিলিগ্রাম রয়েছে।
পানি ফলের ঔষধি গুনঃ
পানি ফলের শুধু খাদ্য গুণই নয়, বরং রয়েছে বেশ কিছু ঔষধি গুণও। পানি ফলের শাঁস
শুকিয়ে রুটি বানিয়ে খেলে অ্যালার্জি ও হাত- পা ফোলা রোগ কমে যায়। উদরাময় ও
তলপেটে ব্যথায় পানিফল খুবই উপকারী। এছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
পানি ফল খাওয়ার নিয়মঃ
পানিফল একটি পুষ্টিকর ফল এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি সঠিকভাবে খেলে
শরীরে নানা ধরনের উপকার মিলে। তবে আসুন জেনে নেওয়া যাক পানি ফল খাওয়ার কিছু
নিয়ম-
সঠিক সময়ে খাওয়াঃ পানিফল সাধারণত সকালে বা দুপুরে খাওয়া ভালো, কারণ
এতে থাকা পুষ্টিগুণ শরীরে খুব সহজেই শোষিত হয়।
নির্দিষ্ট পরিমাণে খাওয়াঃ পানি ফল খাওয়ার সময় অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে
কারণ বেশি পরিমাণে পানি ফল খাওয়া যাবেনা। অতিরিক্ত পরিমাণে পানি ফল খেলে তা
হজমের সমস্যা করতে পারে।
কাঁচা বা রান্না করে খাওয়াঃ পানিফল সাধারণত কাঁচা খাওয়া হয়, তবে
অনেকেই এটি সেদ্ধ করে বা হালকা ভেজে খেতে পছন্দ করে। তবে খেয়াল রাখতে হবে
রান্না করার সময় যাতে বেশি পরিমাণে তেল ব্যবহার করা না হয়।
স্বচ্ছ পানি দিয়ে পরিষ্কার করাঃ কাঁচা পানি ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই এটি
ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, কারণ এর খোসায় মাটি ও জীবাণু থাকতে পারে।
অন্যান্য খাবারের সঙ্গেঃ পানিফল ফল হিসেবে খেতে পারেন, তবে অন্যান্য
খাবারের সঙ্গে একত্রে ছেলে এর পুষ্টিগুণ আরো ভালোভাবে শোষিত হয়। দুধ বা দইয়ের
সঙ্গে মিশিয়ে খেলে উপকার পেতে পারেন।
পানি ফলের চাষ পদ্ধতিঃ
পানি ফল সাধারণত জলাশয়ে জন্মানো একটি জলজ উদ্ভিদ, যার ফল সুস্বাদু এবং
পুষ্টিকর। এটি বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক অঞ্চলের চাষ করা হয়। পানিফল
চাষের বিশেষ যত্ন এবং উপযুক্ত পরিবেশের প্রয়োজন হয়। তবে আসুন জেনে নেওয়া যাক
পানি ফলের চাষ পদ্ধতি সমূহ-
উপযুক্ত জমি নির্বাচনঃ
জলাশয় বা পুকুরঃ পানিফল মূলত স্থির বা ধীরগতির পানিতে ভালো জন্মায়।
পুকুর, বিল এবং নিচু জমি এই ফল চাষের জন্য উপযুক্ত।
জলস্তরঃ জমিতে পানির গভীরতা ১-২ মিটার হওয়া উচিত, কারণ গাছের শিকড়
পানির নিচে মাটিতে থাকে।
পানিঃ বিশুদ্ধ এবং পরিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করা উত্তম। দূষিত পানি হলে
ফলের মান কমে যেতে পারে।
জমি প্রস্তুতিঃ
- জলাশয়ের মাটি নরম এবং পুষ্টিকর হওয়া প্রয়োজন। মাটিতে জৈব সার যেমন: গোবর, কেঁচো সার বা কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
- পানিফল বীজ জ বা চারা রোপনের আগে জমি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে, যাতে আগাছা বা অন্যান্য অবাঞ্ছিত উদ্ভিদ না থাকে।
বীজ বপন বা চারা রোপনঃ
বীজ বপনঃ পানি ফলের বীজ সরাসরি পানির নিচে বপন করা যায়। বপনের সময়
সাধারণত মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে হয়।
চারা রোপনঃ যদি চারা ব্যবহার করেন, তাহলে চারা ৫০-৭০ সেমি দূরত্বে রোপন
করা উচিত।
সার ব্যবস্থাপনাঃ
- প্রাথমিক অবস্থায় জৈব সার ব্যবহার করা ভালো। এর সঙ্গে সামান্য পরিমাণে ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।
- সার প্রয়োগের সময় পানির স্তর ঠিক রাখতে হবে, যাতে স্বাভাবিকভাবে গাছের শিকড়ে পৌঁছায়।
পানির ব্যবস্থাপনাঃ
- গাছের বৃদ্ধির জন্য স্থিতিশীল এবং স্বচ্ছ পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- পানির স্তর ১-২ মিটার ধরে রাখতে হবে, বিশেষ করে বর্ষার সময় অতিরিক্ত পানি যাতে জমি থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।
আগাছা এবং পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণঃ
- পানি ফলের জমিতে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করা উচিত, কারণ এগুলো গাছের বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
- পানি ফলের ক্ষেত্রে সাধারণত তেমন ক্ষতিকর পোকামাকড় দেখা যায় না। তবে যদি পোকামাকড় দেখা দেয়, তাহলে প্রয়োজনীয় জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
ফল সংগ্রহঃ
- পানিফল সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে সংগ্রহ করা হয়।
- হোলগুলো হাত দিয়ে বা বিষের যন্ত্রের মাধ্যমে তুলে ফেলা হয়। স্থলের শিকর বা ডাঁটা পানির নিচে থাকে, তাই সেগুলো সাবধানে সংগ্রহ করতে হয়।
সংরক্ষণঃ
- সংরক্ষণের পর তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিতে হয়। শুকিয়ে নিলে ফল বেশিদিন সংরক্ষণ করা যায়।
পানি ফল খাওয়ার ১০টি উপকারিতাঃ
প্রত্যেকটি ফলের কিছু না কিছু উপকারিতা আছে। তেমনি পানি ফল খাওয়ারও বেশ কিছু
উপকারিতা রয়েছে। নিম্নে সেই উপকারিতা সমূহ আলোচনা করা হলো-
হাইড্রেশন বজায় রাখেঃ প্রায় পানের ফলে প্রায় পানি ফলে প্রায় ৭৪-৭৫%
পানি থাকে যা শরীরের পানি শূন্যতা দূর করতে সহায়তা করে। গ্রীষ্মকালে বা
অতিরিক্ত ঘাম হলে এটি খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে এবং পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ পানি ফলে ক্যালরির মাত্রা কম থাকে বলে এটি
ওজন কমানোর ডায়েটের জন্য উপযুক্ত। এতে ফ্যাটের পরিমাণও কম থাকে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধঃ পানি ফলে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট
থাকে যা শরীরের মুক্ত র্যাডিক্যালস দূর করতে সাহায্য করে। যার ফলে ক্যান্সার
প্রতিরোধ এবং পার্থক্য জনিত প্রভাব কমায়।
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ এতে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে যা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে এবং পেটের সুস্থতা বজায় রাখে।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধঃ পানির ফলে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে যার রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
অ্যানিমিয়া প্রতিরোধঃ পানি ফলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা রক্তের
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে।
ডায়াবেটিসের জন্য উপকারীঃ রক্তের মধ্যে চিনির মাত্রা বৃদ্ধি পেলে
ডায়াবেটিস হতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে এবং রক্তের মধ্যে চিনি বা সুগারের
মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পানি ফলের উপকারিতা পাওয়া যায়। পানি ফলের মধ্যে
পলিফেনল নামক একটি উপাদান আছে, যার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়কঃ পানিফল উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের
সহায়ক কারণ পানি ফলের মধ্যে আছে পটাশিয়াম আর এই পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে
সাহায্য করে। এছাড়াও স্ট্রোকের মত হৃদরোগের ঝুঁকির কারণগুলি কমাতেও সাহায্য
করে।
হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করেঃ পানিফল হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে
কারণ পানির ফলের মধ্যে আছে পটাশিয়াম যার হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
ত্বকের জন্য উপকারীঃ পানিফল নিঃসন্দেহে আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী
একটি উপাদান। আমাদের শরীর থেকে টক্সিন বের করে রক্তকে শুদ্ধ করতে সাহায্য করে
পানিফল। এছাড়াও পানি ফল ত্বক উজ্জ্বল রাখতেও সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় পানি ফল খাওয়ার উপকারিতাঃ
গর্ভাবস্থায় পানি ফল খাওয়া মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই উপকারী। গর্ভাবস্থায়
পানি ফল খেলে যে উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিম্নে দেওয়া হলো-
পানি শূন্যতা প্রতিরোধঃ পানি ফলে প্রচুর পরিমাণে পানি থাকে যা শরীরে
হাইড্রেশন বজায় রাখতে সহায়তা করে। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে পানি
পান করা জরুরি কারণ এটি মায়ের এবং শিশুর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই
গর্ভাবস্থায় পানি ফল খেলে পানি শূন্যতার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
ফাইবার সমৃদ্ধঃ পানিফল প্রচুর ফাইবার সমৃদ্ধ প্রক্রিয়াকে উন্নত করে।
গর্ভাবস্থায় প্রত্যেক গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দেয় আর এই
পানি ফল যেহেতু ফাইবার সমৃদ্ধ তাই এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে।
ইমিউন সিস্টেমের উন্নতিঃ পানি ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন
বি৬ গর্ভাবস্থায় মায়ের ইমিউন সিস্টেমেকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে, যা
সংক্রমণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশুর বিকাশে সহায়কঃ পানি ফলে যেহেতু আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ এবং
ক্যালসিয়াম থাকে, যা শিশুর হাড়ের গঠন, রক্তের সুষ্ঠু প্রবাহ এবং মস্তিষ্কের
বিকাশে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি থেকে রক্ষা করতে কম
ক্যালোরি ও ফ্যাট যুক্ত পানি ফল উপকারী। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং
সুস্থ গর্ভাবস্থায বজায় রাখতে সহায়ক।
পানি ফল খাওয়ার অপকারিতাঃ
পানি ফলের বহুবিধ উপকারিতা থাকলেও বেশ কিছু অপকারিতাও রয়েছে। তবে জেনে নেওয়া
যাক সেই উপকারিতা সমূহ-
- পানি ফল খাওয়ার পর জল খাওয়া উচিত নয়। কারণ পানিফল শীতল। তাই যদি আপনি পানি ফল খাওয়ার পর জল খাওয়ার তাহলে আপনার ঠান্ডা লেগে সর্দি কাশি হতে পারে।
- পানিফল অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে পেট ব্যথা এবং পেট ফোলার সমস্যা হতে পারে।
- পানিফল খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। তাই পানিফল থেকে যদি গন্ধ ওঠে, তাহলে এটি না খাওয়াই উচিত। কেননা এটি খেলে আপনার ক্ষতি হতে পারে।
- অতিরিক্ত পরিমাণ পানি ফল খাওয়ার ফলে গ্যাস, অম্বল, বদহজম ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
- পানিফল খাবার ফলে অনেকের অ্যালার্জিও হতে পারে। এলার্জির লক্ষণ হবে-চুলকানির, গায়ে ফুসুরি বের হবে, ফোলা ভাব সৃষ্টি হতে পারে।
পরিশেষেঃ
পৃথিবীতে এমন অনেক ফল আছে যেগুলো শুধু আমরা খেয়েই থাকি, কিন্তু এর পুষ্টিগুণ
এবং উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের কোন আইডিয়া থাকে না। তেমনি একটি ফল পানি ফল। আর
এজন্য আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সামনে পানিফল এর পুষ্টিগুণ সহ
যাবতীয় তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
যাতে আপনারা এ বিষয়ে পরিপূর্ণ তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করতে পারেন। আর যদি আপনি
এ বিষয়ে পুরোপুরি তথ্য পেয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি আপনাদের সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে শেয়ার করবেন।
তাছাড়া কন্টেনটি যদি আপনাদের কাছে তথ্যবল মনে হয়ে থাকে তাহলে এরকম নতুন
নতুন ট্রপিক পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন।
সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url