OrdinaryITPostAd

ঘনঘন সেভ করলে কি দাড়ি বেশি গজায়? এবং চাপ দাড়ি গজানোর ঘরোয়া উপায় জানুন

 কি খেলে দাড়ি গজায়?ঘন ঘন শেভ করলে কি বেশি দাড়ি গজায় এ বিষয়টি নিয়ে আপনি বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন এবং চাপ দাড়ি গজানোর ঘরোয়া উপায় জানারও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোথাও সেরকম কাঙ্ক্ষিত উত্তর পাননি। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা এই বিষয়টি আপনাদের সামনে পুরোপুরি ক্লিয়ার করতে যাচ্ছি। আশা করি আর্টিকেলটি পুরো মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

ঘনঘন সেভ করলে কি দাড়ি বেশি গজায়? এবং চাপ দাড়ি গজানোর ঘরোয়া উপায় জানুন

ভূমিকাঃ

প্রত্যেক পুরুষ মানুষেরই মুখভরা দাড়ির স্বপ্ন থাকে। কিন্তুবর্তমানে ম্যাক্সিমাম পুরুষ দাড়ি কম হওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করছেন কিভাবে দাড়ির ঘনত্ব বাড়ানো যায়। কারণ দাড়ি কম থাকার কারণে অনেক ছেলেরা হতাশায় ভুগে থাকেন। 

দাড়ি না থাকার কারণে তাদের সৌন্দর্যে কমতি দেখা যায়। এজন্য তারা দাড়ি গজানোর উপায় খুঁজে বেড়ায়। তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা দাড়ি গজানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি।

ঘনঘন সেভ করলে কি দাড়ি বেশি গজায়?

না, এটা কখনোই না, ঘন ঘন দাড়ি সেভ করলে দাড়ি বেশি গজায় না। এটি সম্পূর্ণ একটি প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণা। গাড়ি সেভ করার অর্থ হচ্ছে ত্বকের উপরিভাগের চুল কেটে ফেলা কিন্তু এটি চুলের বৃদ্ধির গতি, ঘনত্ব বা বেধে কোন পরিবর্তন আনে না। 

কেননা দাড়ির বৃদ্ধি নির্ভর করে আপনার জেনেটিক হরমোন লেভেল এবং অন্যান্য শারীরিক ফ্যাক্টরির উপর। সেভ করার পর দাড়ি নতুন ভাবে গজালে কিছুটা মোটা বা শক্ত মনে হতে পারে, কারণ কাটা অংশগুলো সাধারণত নরম হয় না, কিন্তু এটি সত্যিকারের বৃদ্ধি বা ঘনত্বের পরিবর্তন আনে না।

কোন হরমোন এর অভাবে দাড়ি গজায় না?

একজন পুরুষ মানুষের দাড়ি গজানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে যে হরমোনটি সেটির নাম হল টেস্টোস্টেরন হরমোন হরমোন নামক হরমোন এবং এর ডেরিভেটিভ ডিহাড্রোটেস্টোস্টেন (DHT)। যদি আপনার শরীরে টেস্টোস্টেরলের পরিমাণ কম থাকে বা টেস্টোস্টেরন থেকে DHT তে রূপান্তর কম হয়, তাহলে দাড়ি কম বা দুর্বলভাবে গজাতে পারে। 

তাছাড়া পুরুষদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন এবং DHT হরমোনগুলো দাড়ির বৃদ্ধির জন্য দায়ী থাকে। কোন পুরুষের মধ্যে যদি এই হরমোন গুলোর অভাব থাকে তাহলে দাড়ির বৃদ্ধির গতি কমে যায় বা দাড়ি পাতলা হয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র হরমোনই নয়, অনেক ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে জেনেটিক্সও দাড়ির বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

দাড়ি না গজার কারণঃ

একজন পুরুষ মানুষের দাড়ি না গজানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক দাড়ি না গজানোর কারণসমূহ-

হরমোনজনিত কারণঃ

  • টেস্টোস্টেরন হরমোন এবং ডিহাড্রোটেস্টোস্টেন (DHT) হরমোনের পর্যাপ্ত পরিমাণ না থাকলে দাড়ি গজাতে সমস্যা হতে পারে।
  • হাইপোগোনাডিজম এই অবস্থায় শরীর পর্যাপ্ত টেস্টোস্টেরন উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়, যা দাড়ি বৃদ্ধিতে বাঁধা দেয়।

জেনেটিক্সঃ

  • আরেকটি কারণ হচ্ছে পরিবারের জিনগত গঠন দাড়ির বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা পালন করে। যদি পরিবারের পুরুষদস্যদে দাড়ি কম বা পাতলা হয়, তাহলে আপনার ক্ষেত্রেওএকই প্রবণতা থাকতে পারে।

বয়সঃ

  • দাড়ির ঘনত্ব সাধারণত বয়সের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কিশোর বয়সে দাড়ি কম বা পাতলা হতে পারে, কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।
  • অনেকের আবার ৩০ বছর বয়সের পর দাড়ি পূর্ণতা পায়।

পুষ্টির অভাবঃ

  • আপনার মধ্যে যদি পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব হয় তাহলে আপনার দাড়ি বৃদ্ধিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যদি কোন পুরুষের মধ্যে ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি, প্রোটিন এবং আয়রনের অভাব হলে দাড়ি বৃদ্ধি কমতে পারে।

চর্মরোগঃ

 অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের চর্ম রোগের কারণেও দাড়ির ঘনত্ব কম হয়। একজিমা, সোরিয়াসিস বা অন্যান্য চর্ম রোগের কারণে ত্বকের ক্ষতি হলে, সেই অঞ্চলে দাড়ি গজাতে সমস্যা হতে পারে।

মানসিক চাপঃ

  • কারো মধ্যে যদি দীর্ঘমেয়াদি মানুষিক চাপ থাকে, তাহলে সেই মানসিক চাপ দাড়ির বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে ।

জীবনযাত্রাঃ

  • সবশেষে যেটি আপনার দাড়ি বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করে সেটি হল পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত ধূমপান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্য অভ্যাস ইত্যাদি।

চাপ দাড়ি গজানোর ঘরোয়া উপায়ঃ

দাড়ি দ্রুত গজানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় বা প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যেগুলো আপনার ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং দাড়ি গজাতে সাহায্য করতে পারে। তবে মনে রাখা দরকার যে দাড়ি গজানোর প্রক্রিয়া ব্যক্তিবেদে ভিন্ন হতে পারে এবং এতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। নিচে দাড়ি গজানোর কিছু কার্যকর উপায় দেওয়া হলো-

পেঁয়াজের রসঃ একটি পেঁয়াজের রস বের করে তা দাড়ির অংশে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পেঁয়াজের রসে সালফার থাকে, যা চুলের ফলিকল সক্রিয় করতে এবং দাড়ির বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।

অ্যালোভেরা জেলঃ প্রতিদিন রাতে অ্যালোভেরা জেল দাড়ির জায়গায় লাগিয়ে মেসেজ করুন এবং সারারাত রেখে দিয়ে সকালে ধুয়ে ফেলুন। কেননা অ্যালোভেরা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বকের মৃত কোষ দূর করে যা চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়।

আমলকির তেলঃ আমলকির তেল দ্রুত দাড়ি গজাতে সাহায্য করে। ১৫-২০ মিনিট আমলকির তেল দিয়ে মুখ ম্যাসেজ করুন এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারঃ আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখার চেষ্টা করুন। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম, বাদাম ইত্যাদি খান।এসব খাবার খেলে দ্রুত দাড়ি গজাবে।

তেল ম্যাসেজঃ সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন ক্যাস্টর অয়েল বাদাম তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে দাড়ির জায়গায় মেসেজ করতে পারেন। এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করবে এবং চুল গজাতে সাহায্য করবে।

হালকা গরম পানির ব্যবহারঃ দাড়ির সঠিক বৃদ্ধির জন্য মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি। সেজন্য হালকা গরম পানি দিয়ে দিনে ২-৩ বার মুখ ধুয়ে নিতে হবে। এতে করে আপনার মুখে নতুন দাড়ি গজানো সহজ হবে।

পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামঃ প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম গাড়ির ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। ঘুমের সময় শরীর চুলের ফলিকল মেরামত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।

চুলের বৃদ্ধির জন্য মিনোক্সিডিলঃ মিনোক্সিডিল একটি মেডিকেল টপিক্যাল প্রোডাক্ট যা মাথার চুল এবং দাড়ি গজাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, এটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

স্ট্রেসমুক্ত জীবনযাপনঃ অতিরিক্ত স্ট্রেস দাড়ির বৃদ্ধি ধীর করে দিতে পারে। নিয়মিত মেডিটেশন যোগ ব্যায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করে স্ট্রেস কমানো যেতে পারে, যা দাড়ির বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

এক্সফোলিয়েশন (ত্বকের মৃত কোষ দূর করা): নিয়মিত সস্ক্রাব করে মুখ পরিষ্কার রাখতে হবে। কেননা এটি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং চুলের ফলিকলকে সক্রিয় করতে সাহায্য করে। এতে দাড়ি ঘন হয়।

ব্রাশিং ও ছাটাইঃ দাড়ি নিয়মিত ছাটাই বা স্ট্রিম ট্রিম করার ফলে দাড়ি ঘনত্ব বাড়তে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও দাড়ি ব্রাশ করার মাধ্যমে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে যা দাড়ির বৃদ্ধিতে সহায়ক।

সঠিক পরিচর্যাঃ দাড়িকে নিয়মিত পরিষ্কার এবং ময়েশ্চারাইজ করুন। পরিষ্কার ত্বকে দাড়ির ফলিকল আরও কার্যকর ভাবে কাজ করে ফলে দাড়ি ঘন হয়।

মন্তব্যঃ

বর্তমানে বাজারে দাড়ি গজানোর অনেক কার্যকর ওষুধ ও লোশন পাওয়া যাচ্ছে। যেগুলো ব্যবহার করে অনেকেই ভালো ফল পাচ্ছে। কিন্তু এগুলো অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় সবার পক্ষে ব্যবহার করা সম্ভব না। তারপরতো এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছেই। 

তাই আজকে আমরা উপরের আর্টিকেলে দাড়ি গজানোর বিভিন্ন উপায় আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। যেগুলো উপায় প্রয়োগ করে আপনারা খুব সহজেই আপনাদের দাড়ির ঘনত্ব বাড়াতে পারবেন।
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন।

 আর এরকম নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন এবং আর্টিকেল সবার মাঝে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url