OrdinaryITPostAd

ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে শীতের শুরুতে কিভাবে ত্বকের যত্ন করবেন জানুন

কোন ভিটামিনের অভাবে ত্বক শুষ্ক হয়?শীতের শুরুতে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয় যেমন ব্রণ, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, কালো হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। তাই শীত এলে ত্বক নিয়ে আপনাদের মধ্যে দুশ্চিন্তার কোন শেষ থাকে না। আর এজন্য বিভিন্ন জায়গায় আপনারা খোঁজাখুঁজি করেন শীতকালে ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার জন্য। শুধু বড়রা নয়, বাচ্চাদেরও ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যায়।

ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে শীতের শুরুতে কিভাবে ত্বকের যত্ন করবেন জানুন

তাই আজকে আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে জানাতে যাচ্ছি শীতের শুরুতে কিভাবে ত্বকের যত্ন করলে সুন্দর, ফর্সা এবং মসৃণ ত্বক পাবেন। বাচ্চাদেরও ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন সে সম্পর্কে অনেক টিপস তুলে ধরেছি। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের সুন্দর ত্বক পেতে যথেষ্ট সহযোগিতা করবে।

ফর্সা ও উজ্জ্বল পেতে শীতে ত্বকের যত্নঃ

শীতের শুরুতে ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শীতের শুষ্ক আবহাওয়া ত্বককে শুষ্ক ও রুক্ষ করে তোলে। আসুন জেনে নেওয়া যাক শীতে ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার কিছু কার্যকরী উপায়-

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুনঃ শীতকালের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, তাই ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। মুখ ধোয়ার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে তোকে ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজার লাগান। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল বা শিয়া বাটারও ব্যবহার করতে পারেন।

পানি পান করুনঃ শীতে ক পানি কম পরিমাণে খাওয়ার ফলে ত্বক ভিতর থেকে শুষ্ক হয়ে পড়ে।ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কম করে হলেও দিনে অন্তত আট গ্লাস পানি পান করতে হয় হবে।

প্রাকৃতিক তেল ম্যাসেজঃ প্রাকৃতিক তেল যেমন অলিভ অয়েল, নারিকেল তেল বা বাদাম তেল দিয়ে ত্বকে ম্যাসেজ করলে ত্বক মোলায়েম ও উজ্জ্বল থাকে। তাছাড়া শীতকালে সপ্তাহে ২-৩ দিন ত্বকে তেল মেসেজ করতে পারেন ভালো ফলাফলের জন্য।

মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করুনঃ শীতে সাধারণত বেশি ক্ষারযুক্ত ক্লিনজার ব্যবহার না করে মৃদু ক্লিনজার ব্যবহার করুন, যাতে ত্বকে প্রাকৃতিক তেল নষ্ট না হয়। জেল ভিত্তিক বা ক্রিমি টাইপের ক্লিনজার ব্যবহার করতে পারেন।

এক্সফোলিয়েট করুনঃ শীতকালে অন্তত সপ্তাহে একবার মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করে ত্বকের মরা কোষ দূর করুন। তাছাড়া মধু ও ওটমিল দিয়ে ঘরে তৈরি স্কার ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক কমল এবং উজ্জ্বল থাকবে।

সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনঃ শীতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্নির ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই বাইরে যাওয়ার আগে অবশ্য শাস্তি ব্যবহার করবেন কারণ শীতকালেও ত্বক সূর্যের অতি বেগুনি রশ্নির প্রভাবে শিকার হতে পারে।

শীতে ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার খাবারঃ

শীতে ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল রাখতে খাদ্য তালিকায় কিছু নির্দিষ্ট খাবার রাখা যেতে পারে যা ত্বক ভিতর থেকে পুষ্টি দেয় এবং উজ্জ্বল রাখে। নিচের সেই সব খাবারের ।তালিকা দেওয়া হল-

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলঃ ভিটামিন সি ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের কোষগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করে। শীতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলালেবু, মালটা, পেয়ারা, লেবু, স্ট্রবেরি, কিউই এবং আমলকির মতো ফল খেতে পারেন। আর এসব ফল ত্বক উজ্জ্বল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বাদাম ও বীজঃ বাদাম বিশেষ করে আলমন্ড, আখরোট এবং সূর্যমুখী বীজ ত্বকের জন্য উপকারী। কেননা এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে যা ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং শীতের শুষ্ক আবহাওয়য় ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। এছাড়া ভিটামিন ই- এর উপস্থিতি ত্বককে ভিতর থেকে সরবরাহ করে।

সবুজ শাকসবজিঃ শীতে ত্বক উজ্জ্বল রাখতে পালং শাক, ব্রকলি, কপি ইত্যাদি সবুজ শাকসবজি খেতে পারেন। এতে ভিটামিন এ,সি এবং কে থাকে যা ত্বকের পূর্ণগঠন করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।

টমেটোঃ টমেটোতে লাইকোপেন থাকে, যা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবে কাজ করে এবং ত্বককে রোদে পড়া থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া এটি ত্বকের রং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।

মাছঃ মাছের মধ্যে বিশেষত সামুদ্রিক মাছ, যেমন সালমান, ম্যাকারেল,ও টুনাতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এটি ত্বককে মোলায়েম করে এবং শীতের শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে।

ডিমঃ ডিমে প্রোটিন, বায়োটিন এবং ভিটামিন ই থাকে যা ত্বককে ভিতর থেকে পুষ্টি যোগায় এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারঃ দুধ টক দই ও পনিরের মত দুগ্ধগত খাবারে প্রোটিন ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি থাকে, যা ত্বককে ভিতর থেকে পুষ্টি দেয় এবং মসৃণ ও উজ্জ্বল করে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ চাঃ গ্রিন টি বা হারবাল টি ত্বককে ভিতর থেকে সুস্থ রাখে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং ত্বকের উ জ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

শীতে উজ্জ্বল ত্বক পেতে ঘরে তৈরি ফেসপ্যাকঃ

শীতে উজ্জ্বল ত্বক পেতে বিভিন্ন ফেসপ্যাক রয়েছে যেগুলো খুব সহজেই ঘরে তৈরি করা যায়। আর এই ফেসপ্যাকগুলো ব্যবহারের ফলে শীতে ত্বক মসৃণ, নরম ও উজ্জ্বল থাকবে।

মধু ও দই এর ফেসপ্যাকঃ ১ চামচ মধু ও ২ চামচ টক দই ভালো করে একত্রে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দই ত্বকে এক্সফোলিয়েট করে এবং মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।

কলা ও অলিভ অয়েল ফেসপ্যাকঃ কলা ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কলার ত্বককে মোলায়েম করে আর অলিভ অয়েল ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।

মুলতানি মাটি ও গোলাপজলঃ ১ টেবিল চামচ মুলতানি মাটির সাথে প্রয়োজনমতো গোলাপ জল মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন এবং শুকানোর পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মুলতানি মাটি ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে এবং গোলাপজল ত্বককে সতেজ করে তোলে।

ওটমিল ও মধুর ফেসপ্যাকঃ ১ চামচ ওটমিল গুঁড়া, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১-২ টেবিল চামচ দুধ একত্রে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন এবং এই পেস্ট ত্বকে লাগান। তারপর ১৫ মিনিট পর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ওটমিল ত্বকের মৃত কোষ দূর করে, দুধ ত্বককে উজ্জ্বল করে আর মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।

বেসন ও কাঁচা দুধের ফেসপ্যাকঃ ১ টেবিল চামচ বেসন ও ২ টেবিল চামচ কাঁচা দুধ একত্রে ভালোভাবে মিশিয়ে ত্বকে লাগান এবং ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। বেসন ত্বককে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে এবং দুধ ত্বকের প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

শীতে বাচ্চাদের ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার উপায়ঃ

 শীতে বাচার ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল রাখতে কিছু সহজ এবং ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করা যায়। শিশুদের ত্বক খুবই সংবেদনশীল, তাই প্রাকৃতিক এবং মৃদু উপায় ব্যবহার করাই ভালো। আসুন জেনে নেওয়া যাক শীতে শিশুদের ত্বক ফর্সা ও উজ্জ্বল রাখার ঘরোয়া কিছু উপায়-

ময়েশ্চারাইজিংঃ শীতকালে বাচ্চাদের ত্বক খুব তাড়াতাড়ি বা সহজেই শুষ্ক হয়ে যায়, তাই প্রতিদিন গোসলের পর ভালো মানের বেবি ময়েশ্চারাইজার বা কোকোনাট অয়েল ব্যবহার করুন। এতে আপনার শিশুর ত্বক নরম ও মসৃণ থাকবে।

অলিভ অয়েল ম্যাসেজঃ নিয়মিত অলিভ অয়েল বা বাদাম তেল দিয়ে বাচ্চাদের ত্বকে হালকা ম্যাসেজ করুন। এটি ত্বকে শুষ্কতা দূর করে এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আনে। তাছাড়া ম্যাসাজ ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

দুধ ও কাঁচা হলুদের প্যাকঃ ১ টেবিল চামচ কাঁচা দুধের সাথে ১ চিমটি কাঁচা হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে বাচ্চার মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে দিন। ৫ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হলুদ ত্বকের মলিনতা দূর করে এবং দুধ ত্বককে মোলায়েম ও উজ্জ্বল করে।

কুসুম গরম পানিতে গোসলঃ বাচ্চাদের গোসলের সময় খুব গরম পানি না ব্যবহার করে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং শীতকালে ত্বক শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।

সঠিক খাদ্যাভ্যাসঃ বাচ্চাদেরকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পানির অভ্যাস করুন এবং তাদের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত ফল, শাকসবজি এবং পুষ্টিকর খাবার যোগ করুন। এতে ত্বকের স্বাস্থ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখার সহজ হবে।

ঠান্ডা ও ধুলিবালি থেকে সুরক্ষাঃ বাচ্চাদের শীতে বাইরে নিয়ে গেলে স্কার্ফ বা ক্যাপ দিয়ে ত্বক ঢেকে রাখুন যাতে ঠান্ডা বাতাস এবং ধুলিবালি থেকে ত্বক সুরক্ষিত থাকে।

পরিশেষেঃ

অনেকেরই কাছে খুব পছন্দের একটি ঋতু। কিন্তু পছন্দের হলেও ত্বক নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয় শীতে। আশা করি উপরের উপায় গুলো সঠিকভাবে যদি আপনারা ফলো করেন তাহলে আপনাদের ত্বক নিয়ে আর কোন সমস্যা থাকবে না এবং শীতকে সুন্দর ত্বক নিয়ে ভালোভাবে উপভোগ করতে পারবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url