ঢাকা টু থাইল্যান্ডের বিমান ভাড়া কত বিস্তারিত জানুন?
থাইল্যান্ডের দর্শনীয় স্থানসমূহ কি কি?স্বপ্নের দেশ থাইল্যান্ড যেতে অনেকেই থাইল্যান্ডের বিমান ভাড়া কত জানতে চায়। এজন্য বিভিন্ন জায়গায় সার্চ করে থাকে। আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে জানাতে যাচ্ছি ঢাকা টু থাইল্যান্ডের বিমান ভাড়া কত সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে।
ভূমিকাঃ
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছরই অনেক পর্যটক থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যায় হানিমুনে, লেখাপড়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা ইত্যাদি পারপাসে। ঢাকা থেকে থাইল্যান্ডে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের বিমান যায়। একেক এয়ারলাইন্সের ভাড়া একেক রকম হয়।
তাই আজকে আর্টিকেলে আমরা বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ভাড়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি। আশা করি আপনাদের ভাড়া নিয়ে আর কোন সমস্যা হবে না। আপনারা আপনাদের পছন্দ অনুযায়ী যে কোন এয়ারলাইন্সে যেতে পারবেন।
থাইল্যান্ড কি জন্য বিখ্যাত?
থাইল্যান্ড দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ইন্দোচীন উপদ্বীপে অবস্থিত এবং এর গ্রীষ্মমন্ডলীয় সমুদ্র সৈকত, বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদ, প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ এবং সুন্দর বৌদ্ধ মন্দিরের জন্য বিখ্যাত।
ঢাকা টু থাইল্যান্ড কোন বিমানগুলো চলাচল করে?
বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে বিভিন্ন ধরনের এয়ারলাইন্স যায়। কিন্তু আপনারা জানেন না যে বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে কোন কোন বিমান যায়,তবে এগুলো জানা থাকলে আপনি সহজে আপনার পছন্দের যে কোন একটি এয়ারলাইন্সে বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে যেতে পারবেন।
এবং কোন কোন এয়ারলাইন্স কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তার সহজে জানতে পারবেন। তাই আপনাদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে যেসব বিমান যায় তাদের তালিকা তুলে ধরলাম-
- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
- ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স।
- শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স।
- ভিস্তারা এয়ারলাইন্স।
- ইন্ডিগো এয়ার।
- ব্যাংকক এয়ারলাইন্স।
- থাই এয়ারওয়েজ।
- এয়ার ইন্ডিয়া।
- এমিরেটস।
ঢাকা টু থাইল্যান্ডের বিমান ভাড়া কতঃ
ঢাকা থেকে থাইল্যান্ডে ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের বিভিন্ন এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। আপনি কোন ধরনের এয়ারলাইন্সে ভ্রমণ করবেন সেই এয়ারলাইন্স এর যাত্রার সময়, তারিখ, এয়ারলাইন্সের সেবা, রুট এবং বিমানের শ্রেণী অনুযায়ী টিকিটের দাম ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।
আনুমানিকভাবে ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া ২৩,০০০ থেকে ২৪,০০০ হাজার টাকার মধ্যে হতে পারে। তবে জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ঢাকা টু থাইল্যান্ডের বিমান ভাড়া সম্পর্কে-
ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স:
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের একটি সরকারি এয়ারলাইন্স। এই এয়ারলাইন্স সরাসরি ঢাকা থেকে ব্যাংককের ফ্লাইট পরিচালনা করা থাকে। এই এয়ারলাইন্সে আরেকটি সুবিধা হল এটি নন- স্টপ ফ্লাইট হওয়ায় আপনার সময় বাঁচাতে এটি একটি চমৎকার পছন্দ হতে পারে আপনার জন্য।
এই এয়ারলাইন্সে ইকনোমিক ক্লাসের ভাড়া ৪৪,০০০ থেকে ৫৫,০০০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া ৭৫,০০০ থেকে ৯৫,০০০ টাকা। তবে কখন কখন এই বিমানে প্রমোশনাল ছাড় পাওয়া যায়। তাছাড়া যাত্রা তারিখ এবং সময় ভাড়ার উপর প্রভাব ফেলে, তাই সবসময় আগে থেকেই বুকিং করা ভালো।
ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স:
ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের একটি নামিদামি এয়ারলাইন্স। তাদের সেবা সময়মত ফ্লাইট এবং উন্নত মানের কাস্টমার সার্ভিসের জন্য এয়ারলাইন্সটি বেশ জনপ্রিয়। এই এয়ারলাইন্সের ইকোনমিক ক্লাসের ভাড়া হচ্ছে ৩৮,০০০ থেকে ৪৮,০০০ টাকা পর্যন্ত এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া হচ্ছে ৬৫,০০০ থেকে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া এই এয়ারলাইন্সে আপনি আরামদায়ক যাত্রা উপভোগ করতে পারবেন।
ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া থাই এয়ারওয়েজ:
থাই এয়ারওয়েজ সরাসরি ঢাকা থেকে ব্যাংকক ফ্লাইট পরিচালনা করে। থাই এয়ারওয়েজ থাইল্যান্ডের একটি জাতীয় বিমান সংস্থা এবং এরা উন্নতমানের সেবা প্রদান করে থাকে। থাই এয়ারওয়েজে ইকোনমিক ক্লাসের কোন সিট নেই।
এই এয়ারলাইন্সে বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া হচ্ছে ৪৪,০০০ থেকে ৫৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। থাই এয়ারওয়েজের সঙ্গে আপনি আনন্দদায়ক যাত্রা উপভোগ করতে পারবেন।
ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স:
মালোশিয়া এয়ারলাইন্স এশিয়ার মধ্যে একটি অন্যতম জনপ্রিয় এয়ারলাইন্স, যা আন্তর্জাতিক মানের সেবা প্রদান করে থাকে। এই এয়ারলাইন্সের ইনকামিং ক্লাসের ভাড়া হচ্ছে ৩২,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া হচ্ছে ৬৫,০০০ থেকে ৭৫,০০০ টাকা পর্যন্ত।
ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স:
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স তাদের দুর্দান্ত সার্ভিস এবং ট্রানজিট সুবিধার জন্য বিখ্যাত। যা তাদের উচ্চমানের সেবা এবং আরামদায়ক যাত্রার জন্য পরিচিত। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ইনকামিং ক্লাসের ভাড়া হচ্ছে ৩৫,০০০ থেকে ৪২,০০০ টাকা এবং বিজনেস ক্লাসের ভাড়া হচ্ছে ৪৮,০০০ থেকে ৬৫,০০০ টাকা পর্যন্ত।
আপনারা যারা প্রেমিয়াম সেবা প্রিমিয়াম সেবা এবং আরামদায়ক ভ্রমণ চান তাদের জন্য সিঙ্গাপুর এয়ার লাইন্স হতে পারে বেস্ট চয়েস।
ঢাকা টু থাইল্যান্ড বিমান ভাড়া শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স:
শ্রীলংকান এয়ারলাইন্স দক্ষিণ এশিয়ার একটি প্রধান বিমান সংস্থা, যা উন্নত মানের সেবা প্রদান করে থাকে। এই এয়ারলাইন্সের ইনকামিং ক্লাসের কোন সিট নেই। আর বিজনেস ক্লাসের ভাড়া হচ্ছে ৮০,০০০ থেকে ১,০৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। আপনার যাত্রা আরামদায়ক হওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স একটি সাশ্রয়ী মূল্যের বিকল্প হতে পারে।
ঢাকা থেকে থাইল্যান্ড যেতে কত সময় লাগে?
ঢাকা থেকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে যেতে ফ্লাইটের সময় লাগে সাধারণত ২ ঘন্টা ৩০ মিনিট থেকে ৩ ঘন্টা পর্যন্ত। লাইটের সময়কাল নির্ভর করে এয়ারলাইন্সের ধরন ও ফ্লাইটের রুটের উপর। তাছাড়া নন স্টপ ফ্লাইটগুলো দ্রুত পৌঁছালেও ট্রান্সজিট ফ্লাইটগুলোতে সময় বেশি লাগে।
ট্রান্সজিট ফ্লাইটগুলোতে সময় ৮ থেকে ২১ ঘন্টা পর্যন্ত লাগতে পারে, এটি এয়ারলাইন্স এবং ট্রান্সজিট লোকেশানের উপর নির্ভর করে।
সস্তায় টিকিট কেনার উপায়ঃ
ঢাকা থেকে থাইল্যান্ড যেতে সস্তায় টিকিট কেনার কিছু উপায় আছে, নিম্নে সেগুলো দেওয়া হলো-
আগে থেকে টিকিট কিনুন: সাধারণত ফ্লাইটের তারিখে ৪-৮ সপ্তাহ আগে টিকিট কিনে দাম তুলনামূলক কম হয়। তাছাড়া ছুটির মৌসুম বা উৎসবের সময় এড়িয়ে টিকিট কেনার চেষ্টা করুন। এতে করে কম দামে টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
লো -কোস্ট এয়ারলাইন্স ব্যবহার করুন: বাজেট এয়ারলাইন্স যেমন- এয়ার এশিয়া, মালি ইন্ডিগো বা অন্য কোন লো- কোস্ট ক্যারিয়ার বেছে নিন।
ট্রাভেল এজেন্ট এর সাথে যোগাযোগ করুন: অনেক সময় ট্রাভেল এজেন্ট এর কাছে গ্রুপ টিকিট বা বিশেষ ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়।
ইনকগনিটো মোড ব্যবহার করুন: ব্রাউজারে ইনকোগনিট বা প্রাইভেট মোড চালু করে টিকিটের দাম চেক করুন। কারণ বারবার সার্চ করলে দাম বেড়ে যেতে পারে।
অফ- সিজনে ভ্রমন করুন: পর্যটন মৌসুমের বাইরে (বর্ষাকালে) টিকেটের দাম তুলনামূলক কম থাকে।
ফ্লাইট ডিল খুঁজুন: অনেক এয়ারলাইন্স বিশেষ ছাড় বা প্রমোশনাল অফার দিয়ে থাকে। এ ধরনের অফার গুলো খুঁজে নিলে ভালো দামের টিকেট কিনতে পারবেন।
বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের তুলনা করুন: একটি নির্দিষ্ট এয়ারলাইন্সের টিকিট না দেখে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের সাথে তুলনা করুন। এতে আপনি ভালো দামে টিকিট পেতে পারেন।
ঢাকা টু থাইল্যান্ড সবার কাছে এত জনপ্রিয় গন্তব্য কেন?
বিভিন্ন কারণে ঢাকা টু থাইল্যান্ড সবার কাছে জনপ্রিয়। আসন জেনে নেওয়া যাক জনপ্রিয়তার কারণ সমূহ-
সুলভ খরচে আন্তর্জাতিক ভ্রমন: থাইল্যান্ড দক্ষিণ এশিয়ার সাশ্রয়ী আন্তর্জাতিক গন্তব্য। এখানে বিমান ভাড়া থাকা খাওয়ার খরচ তুলনামূলকভাবে কম। এমনকি হোটেল, খাবার এবং পরিবহন বাজেট অনুযায়ী নানা ধরনের পছন্দের সুযোগ রয়েছে এখানে।
সহজ ভিসা প্রক্রিয়া: বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য থাইল্যান্ডের ভিসা প্রক্রিয়ার সহজ এবং তুলনাও ভাবে দ্রুত হয়ে থাকে। অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুবিধা থাকায় অনেকেই স্বল্প সময়ে ভ্রমণের জন্য থাইল্যান্ডকে বেছে নেয়।
উন্নত চিকিৎসা এবং স্বল্প সময় ভ্রমণের সুযোগ: থাইল্যান্ড তার বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা এবং সাশ্রয়ী চিকিৎসার জন্য বিখ্যাত। তাই অনেক বাংলাদেশী থাইল্যান্ডে মেডিকেল ট্যুরিজমের জন্য যায়। তাছাড়া ঢাকা থেকে ব্যাংককের ফ্লাইট মাত্র ২-৩ ঘন্টার। তাই স্বল্প সময়ে এখানে ভ্রমণ করার সুযোগ রয়েছে।
সাফান বিডির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url